দেশী গরুর ভাল দাম, পশু পালনে আগ্রহ বাড়বে খামারী ও গৃহস্থদের


কুরবানীর ঈদের আর কয়েকদিন বাকি, আর তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশু হাটগুলোতে শুরু হয়েছে বেচাবিক্রি, ক্রেতাবিক্রাদের আনাগনায় মুখর থাকছে জেলার ছোটবড় সব হাটই। এবছর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় গরু উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় না আসায়, হাট গুলোতে দেশী গরুর ভাল দাম পাচ্ছেন খামারী ও গৃহস্থরা। 

দেশী গরু ভাল দাম আগামীতে পশু পালনে আগ্রহ আরো বাড়াবে খামারী ও গৃহস্থ। আর ধারাবাহিকভাবে দেশীয় খামার গড়ে উঠলে গরুর জন্য ভারতের প্রতি নির্ভরশীলতা কমবে, বন্ধ হবে সীমান্তে অনাকাঙ্খিত প্রাণহানী। সীমান্তে যত প্রাণহানী ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশই গরু আনা নেওয়াকে কেন্দ্র করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যতম পশুর হাট বটতলা হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে আসা গরুর সবই দেশী গরু। এ হাটে যারা গরু নিয়ে এসেছেন তাদের অধিকাংশই বাড়িতে গরু লালনপালন করা গৃহস্থ। তারা বাড়িতে দুই-তিনটি গরু পালেন যা কুরবানী ঈদে বিক্রি করে থাকেন। দুই-তিনটি করে বিভিন্ন গৃহস্থ বাড়ি থেকে আসা গরুতেই ভরে যাচ্ছে হাট। তারাই এবার কুরবানীতে পশুর বড় জোগানদাতা।
এমনই একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষœ-গোবিন্দপুর এলাকার আমিনুল ইসলাম, তিনি বাড়িতে পোষা একটি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। ৬৫ হাজার টাকা হলে গরুটি বিক্রি করবেন বলে জানান। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো গরু লালন পালনে যে খরচ তাতে লাভ হবে কিনা, উত্তরে আমিনুল ইসলাম জানান, কিছুটা লাভ হবে, এবার হাটে গরুর চাহিদা আছে, দামও ভাল। ঘন্টাখানেক পর হাট ঘুরে আবারো আমিনুল ইসলামের সাথে দেখা হলে জানান, ৬৩ হাজার টাকায় তার গরুটি বিক্রি করেছেন, ঈদে গরুর বিক্রির কিছু টাকা খরচ করবেন, তার বাকিটা সঞ্চয় করবেন।
হাটে গরু কেনার জন্য এসেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা কাওসার আলী রিপন, তিনি জানান কুরবানীর জন্য গরু কেনা, দাম কমবেশি যায় হোক নিতেই হবে, তবে এবার হাটে গরুর দাম গত বারের চেয়ে বেশি মনে হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিভাগে চাকুরী করা নাহিদুল হক নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি খাসি কেনার জন্য এসেছেন, তবে তার বাজেটের চেয়ে অন্তত তিন-চার হাজার টাকা বেশি হয়ে যাচ্ছে। তবে এ ক্রেতা বলেন হাটে খাসির সরবরাহ কিন্তু কম আছে এটা বলা যাবে না, তবে দামটা এবার একটু বেশিই মনে হচ্ছে।
হাট ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের গরু বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরু ৬৫-৭৫ হাজার টাকায়. একটু বড় সাইজের গরু ৯০ হাজার- ১ লাখ টাকায়। অন্যদিকে খাসি বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডাঃ আনন্দ কুমার জানান, এবছর কুরবানীর জন্য ১ লাখ ৬৭ হাজার গবাদী পশু লালন পালন করেছেন স্থানীয় খামারী ও গৃরস্থরা। এই বাইরেরর কিছু পরিবার আছে যারা নিজেরা নিজেদের পোষা পশু কোরবানী দিয়ে থাকেন, সেই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। গত বছর এ জেলার কুরবানী হয়েছিল এ লাখ ৫৮ হাজার পশু, সেই হিসাব ধরলেও এবার কোন ঘাটতি নেয়।
তিনি বলেন, এবার ভারত থেকে গরু উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় না আসায়, হাট গুলোতে দেশী গরুর ভাল দাম পাচ্ছেন খামারী ও গৃরস্থরা। এতে করে আগামীতে পশু পালনে আগ্রহী হবেন, অনেকেই আরো বেশি করে গরু লালন পালন করবেন।
এছাড়াও কুরবানী হাটে গবাদী পশুর চিকিৎসা সহায়তা দিতে প্রানিসম্পদ বিভাগের টিম প্রতিটি হাটে কাজ করছে বলে জানান ডাঃ আনন্দ কুমার।
এদিকে হাট গুলোতে ক্রেতাবিক্রেতা উভয়ের নিরাপত্তায়, পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7