গরিবেরের চেয়ারম্যানের চির বিদায়ে চোখে জল মহারাজপুরবাসীর


চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন, সেই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ছিলেন প্রয়াত এ্যাড নজরুল ইসলাম। তিনবার তিন ইউনিয়নটির চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। শনিবার তার মারা যাওয়ার খবরে, যেন সেখানে এখন শোকের ছায়া।


শনিবার রাতে ঢাকা থেকে মরদেহবাহী গাড়িটি আসার পর থেকেই সবাই শেষবারের মত বিদায় জানাতে হাজির হয়েছিলো চেয়ারম্যান বাড়িতে। অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় জানিয়েছেন তারা। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ চোখ ছলছল নয়নে, বিদায় বেলায় বলেছেন, তাদের মাঝা ভেঙ্গে গেল, সাহস যোগানোর মানুষটিই চলে গেল।
কেউ আর বলবে না, তোমারা চিন্তা করিও না, হ্যামি দেখছি বিষয়টা। কেউ কেউ বিদায় বেলায় বলেছেন, গরিবের ল্যাগা ভাল ছিলো, গরিবের চেয়ারম্যান ছিলো। একবার কড়া কথা কহিলেও, আরেকবার বুকে ট্যানা লিত।



সকাল সাড়ে ৯টায় দিকে চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে, মরদেহ নেয়া হয়, মহারাজপুর হাইস্কুল মাঠে। সকাল ১০টায় জানাজা শুরুর আগে, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ বলেন, তিনি আমার স্যার ছিলেন, আমি সারাজীবনই তাঁকে স্যার বলেই ডেকেছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ডলার বলেন, তিনি বর্তমানে আমাদের সহসভাপতি ছিলেন, এর আগেও তিনি কয়েকবার সহসভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন, বারের উন্নয়নে তার ভুমিকা আমরা চিরদিন স্বরণ করব।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, এ্যাড. নজরুল ইসলাম সোনা জাতীয় পাটির অভিভাবক ছিলেন,আমাদের বড় ভাই ছিলেন, আমাদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল, তার চলে যাওয়া।

মহারজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি তার সরাসরি ছাত্র হলেও, স্কুল আসলে তিনি আমাকে স্যার বা হেড মাস্টার সাহেব বলে কথা বলতেন, তিনি আমার প্রিয় শিক্ষকই ছিলেন না, মহারাজপুর ইউনিয়নের সবার প্রিয় ছিলেন।



চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, এ্যাড. নজরুল ইসলাম সোনা আমাদের খবুই কাছের মানুষ ছিলেন।
আওয়ামীলীগ নেতা মেসবাউল শাকের জ্যোতি বলেন, তিনি শিক্ষক, আইনজীবি, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি ছিলেন, সবকিছু ছাপিয়ে তিনি মহারাজপুর ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করতেন, তিনি  এখাকার বিষয় গুলোকে এগিয়ে নিতে কাজ করে গেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মাওলানা আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘ তিনি সবসময়ই যাতে শান্তি বিরাজ করে, সেই চিন্তায় করতেন, সবাইকে সু পরামর্শ দিতেন। এখন আমরা বুঝতে পারছি না, কিন্ত একমাস, দুই মাস পর যখন কোন বিপদে পড়ব, তখন মনে হবে সোনা চেয়ারম্যানের কথা, তিনি আমাদের কাছে কতটা কাছের মানুষ ছিলেন।
বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ‘‘ আমার মামলায় তিনি সুপারিশ করছেন, আমি কোন দিনই তাকে একটা পয়সাও দিতে পারেনি। তিনি বলতেন তুমি আমার এলকার ছোট ভাই তার জন্য আমি কোর্টে দাঁড়িয়েছি।’ তিনি প্রয়াত নজরুল ইসলাম সোনাকে যোগ্য ও নায্য শালিশদার হিসাবে আখ্যা দিয়ে বলেন, আমরা একটা যোগ্য শালিশদারকে হারালাম।
মহরাজপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এজাবুল হক বুলি বলেন, কেউ ই ভুলত্রুটির উর্দ্ধে নয়, আমারও ভুল আছে, তিনি তিন বারের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি কাজ করেছেন, ভুলত্রুটি হতে পারে তাঁকে সবাই আপনারা ক্ষমা করে দিন।

সাপ্তাহিক সোনামসজিদ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আলী  বলেন ‘‘ আমরা মহারাজপুরের মহান নেতাকে আজ হারালাম, আমি ছাত্রবস্থায় প্রথম ভোট তাঁকে দিয়েছিলান ১৯৮৪ সাথে, আমার প্রথম ভোটই কাছে লেগেছিল,তিনি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন’’ তিনি আমার শিক্ষাগুরু ছিলেন, তার কাছে আমরা অনেক ঋনী। 




১০টায় জানাজার নামাজ শেষে তাকে মহারাজপুর সরকারি কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
কর্মজীবনের শুরুতে নজরুল ইসলাম মহারাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা শুরু করেছিলেন। পরে যুক্ত হন আইনপেশায়,মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জেলা আইনজীবি সমিতির সহ-সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিলেন, এর আগেও চারবার তিনি একই পদে দ্বায়িত্ব পালন করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নে তিন বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসাবেও তিনি দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন।
শনিবার দুপুুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭০ বছর বয়সে মারা যান, এ্যাড নজরুল ইসলাম, তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সার ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।


 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7