গ্রামবাংলার লাঠিখেলা টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা


একসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতেও লাঠি খেলার দল ছিলো, গ্রামেগঞ্জে লাঠি খেলা হত। কিন্ত এখন আর সেই সুদিন নেই, পৃষ্ঠপোষকতার অভাবেই হারিয়ে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাঠি খেলার দলগুলো। অনেকটা আক্ষেপের সুরেই কথাগুলো বলেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্রীড়া সংগঠক ও প্রবীন রাজনীতিবীদ ইসরাইল সেন্টু।

রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ছিলো লাঠি খেলা। সেখানে বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী কুষ্ঠিয়া থেকে এসে তাদের খেলা দেখিয়েছে। দলটির ২৯ সদস্যের প্রতিটি কসরতই মুগ্ধ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শকদের। রবিবার বিকালে সেই লাঠি খেলা দেখতে এসে মুগ্ধ হওয়ার সাথে সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাঠি খেলার দলগুলো পৃষ্ঠপোষকরার অভাবে হারিয়ে যাওয়া আক্ষেপ ছিলো ইসরাইল সেন্টু সহ অনেকের মনেই।
বিকাল ৪টার দিকে মাঠে ঢোল ও ঢাকের তালে শুরু হয় লাঠি খেলা, বাস্তবে না হলেও পদ্মার চর দখলের কসরত যেন ভয় পাইয়ে দিবে যে কারো, তবে সেই ভয় কাটাতে ছিলো কাঠি নৃত্য, বাঁশ ঘুড়ানোসহ প্রায় ১৭ ধরনের খেলা। দলের সদস্যরা একে একে সবগুলো খেলা দেখিয়ে সবার মনজয় করে নেন।
লাঠিয়াল বাহিনীতে ছিলো দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার কল্পনা ও ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সিনথিয়া। কেন লাঠিয়াল বাহিনীতে যুক্ত হওয়া, তারা দুজনেই জানালো ভাললাগা থেকেই ৪ বছর হয়ে গেল যুক্ত হওয়া। দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার কল্পনা মারর্সাল আর্ট করে, পাশাপাশি লাঠিখেলা দেয়ায়, অন্যদিকে সিনথিয়া বলছিলেন তার নানা লাঠি খেলা করত, ভাল লাগা থেকে সেও এখন লাঠি খেলা দেয়ায়।  
বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর অন্যতম সদস্য রেজাউল করিম ওরফে দোতাল বাউল জানান, আর অন্য ১০টা খেলার মত লাঠিখেলাও একটা খেলা, ক্রিকেট, ফুটবলের মত এ খেলাতেও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। তাহলে আরো দল তৈরী হবে । এখন আগের মত আর লাঠিখেলা হয় না, লাঠি খেলার অনেক কিছু লাগে, বাজনা থাকা লাগে, পোষাক লাগে, আরো অন্য অনেক কিছু পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে এটা ধরে রাখা কঠিন।
বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর সংগঠক সার্বির হাসান চৌধুরী জানান,১৯৩৩ সালে তার দাদা মরহুম সিরাজুল হক চেীধুরী মনে করেছিলেন লাঠি খেলা এটা একটা শিল্প, তার ভাবনা থেকেই তিনি দল গঠন করেছিলেন। সেই থেকেই পথচলা শুরু। দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা নিয়মিতই লাঠি খেলা দেখান।
নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শংকর কুমার কুন্ডু বলেন, আমার এতো সুন্দর সময় অনেক দিন কাটেনি। আজকের বিকালটা সত্যি মুগ্ধ করল আমাকে।
জেলা প্রশাসক মঞ্জরুল হাফিজ জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে আবারো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়েই এমন আয়োজন করা, লাঠিখেলা দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ হয়েছি, আমরা আগামীতে এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখব।

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7