সবার কাছেই পরিচিত আলপনা বাড়িটি

মোঃ মনিরুল ইসলাম,নাচোল: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে দ্যাখন বর্মনের আলপনা দেশের গোন্ডী পেরিয়ে বাইরেও সুনাম কুড়াচ্ছে। নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কামার জগদইল গ্রামের ভজেন বর্মনের মেয়ে দ্যাখন বর্মনের বিয়ে হয় হাটবাকইলের ২ কিলোমিটার উত্তরে টিকইল গ্রামের দাসু বর্মনের সাথে। দ্যাখন বর্মন জানান আমার বিয়ে হওয়া প্রায় ৪০ বছর হল। আমার বিয়ের পর আমার শ্বাশুড়িকে দেকতাম প্রতিদিন ঘরের মেঝে ও দেয়ালে লুতা দিতেন । তখন আমি চিন্তা করলাম কিভাবে বাড়ির আরও সৌন্দর্য বাড়ানো যায়। তখন থেকেই আমি মাঠ থেকে বেলে ও রাংগা মাটি নিয়ে এসে পানিতে ভিজিয়ে রাখতাম।

পরে দেখতাম পানির উপর চর পড়ছে। সেগুলো দিয়ে আলপনা আঁকা শূরু করি। একটু করে শিখতে শিখতে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আলপনা আকঁতে পারি। এখন বিভিন্ন  রকমের গুঁড়া রং বের হয়েছে সেগুলো দিয়ে পুরো বাড়ি ঘরকে আলপনায় সাজিয়ে থাকি। আগে আমি একাই আলপনা করতাম। এখন মেয়ে নাতনি নিয়ে এক সাথে করি। তিনি বলেন পুর্বে দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে বাড়ি আলপনা করে সাজিয়ে দিতাম, এখন বয়স হয়েছে তাই মনের ইচ্ছাটাও অনেক কমে গেছে, যার কারণে এখন দেড় থেকে দুই মাস লেগে যায়।
দ্যাখন বর্মন কে জিজ্ঞাসা করি, এ আলপনা পহেলা বৈশাখ উৎসব উপলক্ষে করেন বলে আমরা শুনেছি। তিনি বলেন প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ২২ তারিখ হরিবাসর উপলক্ষে এ আলপনা করি।
পহেলা বৈশাখ উৎসব উপলক্ষে শুধু বাইরে বারান্দাটা আলপনা করেছি। প্রতি বছর একবার করে নকশা পরিবর্তন করি। আমার দেখা দেখি গ্রামে এখন সবাই আলপনা আঁকা শুরু করেছে। তাই এখন টিকইল গ্রাম আলপনা গ্রাম নামে পরিচিত।
তিনি জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে মাসে দু চারজন সাংবাদিক ও এনজিওর লোকজন আমার বাড়িতে আসে। এমন কি বিদেশ থেকেও সাংবাদিকেরা আমার বাড়িতে আসে। এতে করে তাদের সাথে কথা বলতে আমার কোন  বিরক্তি আসেনা বরং ভালই লাগে। কারণ আমি  মনের সখে এ আলপনা আকিঁ। এমনকি কোন দিন দিনে দু চারজন সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ আমার বাড়িতে আসে। আমি রান্না করার সময় পাই না। তবুও তারা যা যা জানতে চাই আমি তা উত্তর দেয়, কারণ আমি মনে করি এটা আমার একটি গর্ব এবং মানুষের ভালোবাসা।
দ্যাখন বর্মন টিকইল গ্রামে ৭শতক মাটির উপর দুইটি ঘর করে বসবাস করেন। তিনি বলেন আমার স্বামী বেঁচে আছে তার বয়স ৬৫ বছর। তিনি দির্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন, কোন কাজকর্ম করতে পারে না। তিনটি মেয়ে সন্তান আছে। একটি মেয়ে লেখাপড়া করে, একটির বিয়ে দিয়েছি, এক মেয়ে প্রয়াস এনজিওতে স্বাস্থ্য পরিদর্শক হিসেবে কাজ করে। সেখান থেকে কিছু বেতন-ভাতা পায়। সেই থেকে দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে কোনরকম দিনযাপন করছি।




কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7