দশ বছরে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশছোঁয়া বেড়েছে; কিন্তু বাড়েনি শহিদুলের চায়ের দাম। এখনো এক টাকা কাপ চা বিক্রি করে যাচ্ছেন তিনি। শুধু চা নয়, তার ৩ টাকা দামের পুরিও বেশ আকর্ষণীয় মানুষের কাছে। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ ভিড় জমান শহিদুলের দোকানে পুরি-চা খাওয়ার জন্য। অবিশ্বাস্য এবং বাজার বিবেচনায় কঠিন মনে হলেও দশ বছর ধরেই এই ধারাবাহিকতা চলে আসছে। বর্তমান বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা মাহীও শহিদুলের দোকানের পুরি-চা খেয়ে গেছেন। বিস্ময়কর এই গল্পটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের।
নাচোল-সোনাইচ-ী সড়কের পাশেই অবস্থিত মাক্তাপুর কলাবোনা গ্রাম। নাচোল বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে গ্রামটির দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এই গ্রামেরই ষাটোর্ধ্ব সোহরাব আলীর বিশ বছর বয়সী ছেলে শহিদুল পঞ্চম শ্রেণীর লেখাপড়ার পাঠ গুটিয়ে চায়ের দোকান নিয়ে বসেন। এটি দশ বছর আগের কথা। দোকান বলতে বাড়ির সামনে বারান্দায় টিন ও মাটির টালি দিয়ে চালা নামিয়ে গোটা দশেক মানুষ বসার ব্যবস্থা। দোকানের সময়সূচিতেও ভিন্নতা রয়েছে; সারা দিন নয়, আসরের নামাজের পর থেকে থেকে চলে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত। বিনোদনের জন্য ডিশ সংযোগসহ টেলিভিশনও রয়েছে শহিদুলের দোকানে।
শুরুর সময় আশপাশের দোকানে চা ২ টাকা কাপ বিক্রি হলেও শহিদুল শুরু করেন এক টাকা কাপ করে। পাশাপাশি পুরি, পেঁয়াজি, ঘুগনি ও জিলাপিও বিক্রি করে আসছেন। কারিগর বলতে মা শেফালী বেগম ও শহিদুল নিজে। এরপর অনেক বেলা গড়িয়ে গেলেও চায়ের দাম এক টাকা কাপই রয়ে গেছে। পুরিও শুরু থেকে ৩ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম কম রাখার কারণ হিসেবে শেফালী বেগম জানান, ‘শহিদুলের বাবার ইচ্ছে, তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এক টাকা কাপ চা মানুষকে খাওয়াবেন।’ অল্প দামে বিক্রি করলেও যা লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলে যায়। তাছাড়া বাবা-ছেলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষিকাজও করে থাকেন। আগামীতেও অল্প লাভে মানুষকে সেবা দিতে চান। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, তাই অল্প লাভেই সন্তুষ্ট মা শেফালী বেগম।
শহিদুল জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ কাপ চা বিক্রি হয়ে থাকে। অবশ্য কোনো কোনো দিন ১০০ থেকে ১৫০ কাপও চা বিক্রি হয়ে থাকে। আর পুরি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০টি।
বিকেলে চা প্রস্তুত করে ফ্লাস্কে ভরে রাখেন। প্রায় প্রতিদিনই তার পুরি-চা খেতে আশপাশের কয়েক গ্রামসহ সোনাইচ-ী-নাচোলের মানুষও দোকানে আসেন। বাবা বেঁচে থাকাকালীন চায়ের দাম বাড়বে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। তবে শহিদুলের গর্ব তার দোকানে নায়িকা মাহী চা খেয়ে গেছেন।
বেড়াচৌকি গ্রাম থেকে পুরি-চা খেতে আসা মনসুর আলী (৩৭) জানান, ‘কোনো জায়গাতেই এখন আর তিন টাকার নিচে লাল চা নেই। অথচ দশ বছর ধরে এখানে ১ টাকা কাপ চা বিক্রি হচ্ছে। সততার কারণেই এটা সম্ভব হচ্ছে।’ তিনি জানান, প্রায়ই তিনি এখানে পুরি-চা খেতে আসেন।
চা খেতে আসা গ্রামেরই পঞ্চাশোর্ধ্ব সাইদুর রহমান বলেন, সস্তা হলেও শহিদুলের চাসহ অন্যান্য খাবারের গুণগত মান ভালো। তাছাড়া এখানে যারা চা খেতে আসেন তারা এখানকার পুরি-পেঁয়াজিও সঙ্গে করে নিয়ে যান।
সাধাসিধে শহিদুল এখনো বিয়ে করেননি। যেভাবে জীবন চলছে, সেভাবেই আগামীতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তার ইচ্ছে।
কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
নাচোল-সোনাইচ-ী সড়কের পাশেই অবস্থিত মাক্তাপুর কলাবোনা গ্রাম। নাচোল বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে গ্রামটির দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এই গ্রামেরই ষাটোর্ধ্ব সোহরাব আলীর বিশ বছর বয়সী ছেলে শহিদুল পঞ্চম শ্রেণীর লেখাপড়ার পাঠ গুটিয়ে চায়ের দোকান নিয়ে বসেন। এটি দশ বছর আগের কথা। দোকান বলতে বাড়ির সামনে বারান্দায় টিন ও মাটির টালি দিয়ে চালা নামিয়ে গোটা দশেক মানুষ বসার ব্যবস্থা। দোকানের সময়সূচিতেও ভিন্নতা রয়েছে; সারা দিন নয়, আসরের নামাজের পর থেকে থেকে চলে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত। বিনোদনের জন্য ডিশ সংযোগসহ টেলিভিশনও রয়েছে শহিদুলের দোকানে।
শুরুর সময় আশপাশের দোকানে চা ২ টাকা কাপ বিক্রি হলেও শহিদুল শুরু করেন এক টাকা কাপ করে। পাশাপাশি পুরি, পেঁয়াজি, ঘুগনি ও জিলাপিও বিক্রি করে আসছেন। কারিগর বলতে মা শেফালী বেগম ও শহিদুল নিজে। এরপর অনেক বেলা গড়িয়ে গেলেও চায়ের দাম এক টাকা কাপই রয়ে গেছে। পুরিও শুরু থেকে ৩ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম কম রাখার কারণ হিসেবে শেফালী বেগম জানান, ‘শহিদুলের বাবার ইচ্ছে, তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এক টাকা কাপ চা মানুষকে খাওয়াবেন।’ অল্প দামে বিক্রি করলেও যা লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলে যায়। তাছাড়া বাবা-ছেলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষিকাজও করে থাকেন। আগামীতেও অল্প লাভে মানুষকে সেবা দিতে চান। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, তাই অল্প লাভেই সন্তুষ্ট মা শেফালী বেগম।
শহিদুল জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ কাপ চা বিক্রি হয়ে থাকে। অবশ্য কোনো কোনো দিন ১০০ থেকে ১৫০ কাপও চা বিক্রি হয়ে থাকে। আর পুরি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০টি।
বিকেলে চা প্রস্তুত করে ফ্লাস্কে ভরে রাখেন। প্রায় প্রতিদিনই তার পুরি-চা খেতে আশপাশের কয়েক গ্রামসহ সোনাইচ-ী-নাচোলের মানুষও দোকানে আসেন। বাবা বেঁচে থাকাকালীন চায়ের দাম বাড়বে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। তবে শহিদুলের গর্ব তার দোকানে নায়িকা মাহী চা খেয়ে গেছেন।
বেড়াচৌকি গ্রাম থেকে পুরি-চা খেতে আসা মনসুর আলী (৩৭) জানান, ‘কোনো জায়গাতেই এখন আর তিন টাকার নিচে লাল চা নেই। অথচ দশ বছর ধরে এখানে ১ টাকা কাপ চা বিক্রি হচ্ছে। সততার কারণেই এটা সম্ভব হচ্ছে।’ তিনি জানান, প্রায়ই তিনি এখানে পুরি-চা খেতে আসেন।
চা খেতে আসা গ্রামেরই পঞ্চাশোর্ধ্ব সাইদুর রহমান বলেন, সস্তা হলেও শহিদুলের চাসহ অন্যান্য খাবারের গুণগত মান ভালো। তাছাড়া এখানে যারা চা খেতে আসেন তারা এখানকার পুরি-পেঁয়াজিও সঙ্গে করে নিয়ে যান।
সাধাসিধে শহিদুল এখনো বিয়ে করেননি। যেভাবে জীবন চলছে, সেভাবেই আগামীতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তার ইচ্ছে।
কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।