তাহমিনা বেগম, জীবনসংসারে এক সংগ্রামী নারী, একজন মততাময়ী মা। তাহমিনার ৪ ছেলে মেয়ের মধ্যে দুই ছেলে রহিম ও অলি জন্মগত ভাগেই প্রতিবন্ধী। দুই প্রতিবন্ধী ছেলেকে তিনি যেন সারাজীবনই সংগ্রামই করে যাচ্ছেন এ মা। জীবনের শেষবেলাতে এসেও থামেনি সেই লড়াই। তাহমিনার দুই সন্তান রহিম ও অলির জন্মের পর আর অন্য শিশুদের মত ছিলেন না, জন্মের সময় মাথার আকার খানিকটা কম ছিলো, দরিদ্র পরিবারটি চিকিৎসকের কাছে নিয়েও গিয়েছিলো তবে স্বাভাবিকতা ফিরেনি তাদের মাঝে।
প্রতিবন্ধী রহিম ও অলির জন্মগত ভাবেই মাথায় মগজ কম থাকার কারনেই তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়নি, বলে জানান, বারিন্দ্র মেডিকেল কলেজ, রাজশাহীর মেডিশিন বিভাগের প্রধান ডা. গোলাম রাব্বানী।
সময়ের সাথে সাথে প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন তাহমিনা। একহাতে সংসার সামলানো, সাথে প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের খেয়াল রাখতে হত এ মততাময়ী মাকে। ৬৫ বছর বয়সে এসেও সেই দ্বায়িত্ব বয়ে চলেছেন তিনি। এখন চিন্তার ভাঁজ তাহমিনার কপালে, বয়স হয়েছে, তার মৃত্যুর পর কে দ্বায়িত্ব নিবে, এতোদিন চোখে চোখে রাখা নাড়ী ছেড়া প্রিয় এ সন্তানদের। তাইতো মায়ের আকুতি, যেন তার মৃত্যুর আগেই তার দুই সন্তানের মৃত্যু হয়। কতটা নিরুপায় হলেই এমন প্রার্থনা করেন একজন মা।
তাহমিনার ৪ সন্তানের দুইজন প্রতিবন্ধী হলেও, বড় ছেলে ও ছোট মেয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক। স্বামী মারা যাওয়ার পর তাহমিনা সেলাই মেশিন চালিয়ে যা উপজর্ন করেন, তা দিয়েই প্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন। বড় ছেলেও সহযোগিতা করেন, সহযোগিতা করে পাড়া প্রতিবেশীরাও। এখন তাহমিনার বেশি কিছু চাওয়া নেই, বলেন যদি সরকারিভাবে কোন সহায়তা মিলত, তাহলে হয়ত তার সন্তানরা ভাল থাকতেন। প্রতিবেশীরাও চান, পরিবারটির পাশে দাঁড়াক সরকার।
উপজেলা সমাজ সেবার কার্যলয়ের মাধ্যমে তাদের প্রতিবন্ধী ভাতার সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম। প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে তাহমিনা নামের এ সংগ্রামী মমতায়ী মায়ের সন্তানরা একটু ভাল থাকবে, হাসি ফুটবে মায়ের মুখে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
0 Comments:
Post a Comment