‘‘হাতে লিখা ঈদ কার্ড ,হাতে বাটা গাছের মেহেদী ঈদ আনন্দের সেই সরলতাকে আজও খুঁজি’’


মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরের দুই ঈদকে কেন্দ্র করে আনন্দের কমতি কখনোই ছিলো না, সময়ের সাথে সাথে, ঈদ উৎসবে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা, ছোট বেলার ঈদ, বড়বেলার ঈদ, কিংবা সংসারের দ্বায়িত্ব যার কাঁধে তার কাছেই বা ঈদের আনন্দ এখন কেমন, আর এই করোনাকালেই ঘরবন্দী ঈদ উদযাপনই বা কেমন, কিভাবে মানিয়ে নিয়েছেন সবাই... এসবই জানার চেষ্টা করেছেন ফারাহ উলফাৎ রহমান অর্পিতা


আগের গ্রামের সেই চিরচেনা পরিবেশ বদলে গেছে অনেক আগেই, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রামগুলো রুপ নিয়েছে শহরে। শহরের পরিবেশে হাতে লেখা বা কেনা ঈদকার্ডের বদলে এসেছে সোস্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট! গাছের হাতে বাটা মেহেদী হারিয়ে গিয়ে জায়গা করে নিয়েছে নানা ব্যান্ডের কৃত্রিম টিউব মেহেদী! যেন উৎসব উদযাপনে যুক্ত হওয়া নতুন মাত্রা গুলো মানুষ নিজের সুবিধার জন্যই মেনে নিয়েছে ।

তারপরও ফেলে আসা ছোটবেলার স্মৃতিই যেন ফের মনে হয়, মিস্টি হাসানের। ঈদের একাল সেকাল সম্পর্কে তিনি বলছিলেন -"ছোট বেলায় সবাই মিলে চাঁদ দেখার মজাটাই অন্য রকম ছিল। চাঁদ দেখে আশে পাশের বাচ্চারা মিলে বুড়ো বুড়ির ঘর বানাতাম, তারপর সেটা পুড়িয়ে অনেক হই হুল্লোড় করে মজা করতাম!
ছোটবেলা ঈদ মানেই হাতে মেহেদী পড়া চাই ই চাই। চাঁদরাতেই যেন প্রতিটি ঘরেই যেন শুরু হত মেহেদী উৎসব। সবার মধ্যে একরকম ব্যস্ততা থাকত, মেহেদী পাতা সংগ্রহ করা, সেই পাতা শীলপাটায় বাটা. রং ভাল করতে সাথে একটু পান খাওয়ার খর সংগ্রহ করে দেয়া, আরো কত কি। কে কতটা সুন্দর করে দুই হাত ভরে মেহেদী পড়তে পারে তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেত!কে মেহেদী দিতে পারে সেই আপু বা চাচীর কাছে ছুটে যেতাম সবাই!!


এখন ঈদের সেই আনন্দটা আর নেই,,,ঈদ আসলে মেহেদী দেয়ার কথা মনেই থাকেনা! এখন শুধু পরিবারের দায়িত্ব পালন করা হয় কিন্তু নিজের ভিতর ঈদের সেই আনন্দ আর জেগে উঠেনা মনে হয় ইসস আবার যদি ছোট সেই আমি-তে ফিরতে পারতাম,,আবার যদি আগের মতো ঈদের আনন্দে নানানাচি করতে পারতাম!"
আবার অন্য সুর শোনা গেল তরুন উদ্দোক্তা নওশিন ফাতেমার কাছে- মেহেদী দিতে ভালোবাসেন ছোট থেকেই।সেই থেকেই মেহেদী নিয়ে চর্চা,,, পাড়ার কচিকাঁচা থেকে বন্ধুরা সবার কাছেই মেহেদী পড়া মানেই নওশিন!!
"সময় পেলেই মেহেদী পড়ি,,,মেহেদী নিয়ে নানা নকশা করতে বেশ ভালো লাগে আমার" বলছিলেন "henna with noushin" পেজের স্বত্তাধীকারি নওশিন। এই লকডাউনে নিজের সখ নিয়েই উপার্জন শুরু করেছেন তিনি।কাজ করছেন মেহেদী আর্ট আর মেহেদী বিক্রয় নিয়ে!! 

 



"আগে ঈদে ছিল পরিবারের সবার সাথে আনন্দ,সারা বছর এই ঈদের জন্যই মুখিয়ে থাকতাম! কিন্তু করোনার কড়াল থাবায় গত কয়েক ঈদ থেকে বন্দি হয়েই একা একা ঈদ কাটাতে হচ্ছে!এছাড়াও আগে কুরবানির পশুর প্রতি থাকত মায়া -ভালোবাসা,, সারাবছর লালন পালন করায়!এখন আর সেই মায়া থাকেনা আগের দিন হাট থেকে আনা গরু ছাগলের প্রতি! মিস করি ছেলেবেলার সেই সরলতাকে। যা আজকাল নিজের ছেলেমেয়েদের মাঝে খুজি! বলছিলেন ফারজানা আলম।

আমাদের গতিময়তা কি কেড়ে নিচ্ছে আবেগ, প্রশ্ন থেকেই যায়, প্রযুক্তির ছোয়ায় আমারা এগিয়েছি অনেক। সময়ের সাথে তাল মিলয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, নতুনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। তারপরও আমরা যেন পুরোনো দিনের স্মৃতিকে মনে করি, পুরোনো দিনের শিষ্টাচার, শিক্ষা ভুলে না যায়, উৎসব যেন সবার হয়, সবাই নিয়েই যেন আমরা উৎসব পালন করতে পারি এই দিনের প্রত্যাশা সকলেরই । করোনাকালে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, পরিবেশকে সুন্দর রাখতে উদ্যোগী হই, তাহলে আগামী দিন গুলোতে আমাদের সামনে আসবে করোনামুক্ত একটি সুস্থ পৃথিবী। তখন আমরা ঘরবন্ধী ঈদ উৎসব নয়, সবাই মিলেই একসাথে উদযাপন করতে পারব ঈদ।
সবাইকে ঈদ মোবারক



 

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।


About chapainawabganj tv

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7