ফারাক্কার প্রভাব :‘বর্ষায় ভেসে যায় বসতভিটা,খরায় ধুধু বালুচর’


চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা ও মহানন্দার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ করে এ পানি বৃদ্ধির কারণ ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়া। ইতিমধ্যেই চাঁপাইনবাবড়ঞ্জের অন্তত ১০টি ইউনিয়নের ৫০-৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আর পানিবন্দি ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়ন। পদ্মা নদীকে ঘিরেই আবর্তিত হয় এ ইউনিয়নের মানুষের জীবন। এখন গোটা ইউনিয়নটায় যেন পানি থতথয় করছে। তবে এখানকার মানুষগুলো, খরার সময় যেন ধুধু বালুচরের বাসিন্দা হয়ে যান, ফসল ফলানোর প্রয়োজনীয় পানিও যেন তখন দুস্কর হয়ে দাঁড়ায়। ফারাক্কা বাঁধের কারনেই এমন নির্মমতার সাথে তাদের বসবাস মনে করেন পদ্মাপাড়ের মানুষ গুলো।

পাকা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাহিত্যকর্মী রাসেল রহমান বলছিলেন, পদ্মা-গঙ্গার মোহনায় গড়ে উঠা চরে আমরা প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছি, ফারাক্কা বাঁধের কারনে আমরা দূর্যোগের মধ্যেই থাকি, খরার সময় একটুকুও পানি পায়না, বর্ষায় ভেসে যায় আমাদের বসত ভিটা। এবারের বন্যাও ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় এমন ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পাকা ইউনিয়ন গোটাটায় ডুবে গেছে।

স্থানীয় কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত নদীর স্বাভাবিক গতি প্রকৃতি বাঁধাগ্রস্থ করে নিজেদের প্রয়োজনে পানি ধরে রাখার জন্য ফারাক্কা বাধ দিয়েছে, এতে করে নদী তার স্বাভাবিক গতি হারাচ্ছে। এটা জীববৈচিত্রসহ গোটা পরিবেশের জন্যই বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করে। নদীকে তার স্বাভাবিক গতিধারায় প্রবাহিত হতে দেওয়ায় সবার জন্যই মঙ্গল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.আতিকুর রহমান জানান, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী আরো ৪৮ ঘন্টা পানি আসবে। এটা আমরা পর্যবেক্ষন করছি। তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা দিকে পদ্মায় বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
বিপদসীমা অতিক্রমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে বন্যার আংশঙ্কা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে নি¤œাঞ্চাল প্লাবিত হয়েছে, পানি যেহেতু উজান থেকে আসছে, পানি আসার গতিপ্রকৃতির উপরই বিষয়টি নির্ভর করছে, বন্যার আশংকার নেই এমনটা বলতে পারা যাবে না এখনি। আমরা আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধগুলো সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষনে রাখছি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ফৌজদার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ৫টি ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে, এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ শিবগঞ্জের পাকা ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডই প্লাবিত হয়েছে। ১০ ইউনিয়নের প্রায় ৪২ হাজার মানুষ এ দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। এর ভিত্তিতেই প্লাবন এলাকায় সহায়তা হিসাবে চাল বিতরন শুরু করা হয়েছে। সেই সাথে শুকনো খাবার ১০ হাজার প্যাকেট ও ১০০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা সহায়তার জন্য চাহিদা পত্র মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। 






কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7