কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায়, তা সাধারণ আসহায় গরিবদের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়। কিন্তু গতবারের মত এবারও গরিবের ভাগ্যে সামন্যই জুটবে এ অর্থ, কারন এবারও দাম নেই কুরবানীর পশুর চামড়ার। অনেকে তাই আক্ষেপ করেই বলছেন পানির দামে নয়, তার চেয়ে কম দামেই বিক্রি কুরবানীর পশুর চামড়া। ঈদের দিন বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ও জামায়াত থেকে কাচা চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। শহরের স্বরুপনগর উপরাজারামপুর জামায়াতে এবছর চামড়া বিক্রি হয়েছে খাসি ৫০ টাকা আর গরুর চামড়া ৭০০ টাকা। যদিও কয়েক বছর আগেও একটি গরুর চামড়া ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়, আর খাসির চামড়া অন্তত ২৫০ টাকায়। ওই জাায়াতের দ্বায়িত্বে থাকা আব্দুল খালেক নামে একজন বলছিলেন, গতবছরের মতই এবারও চামড়ার দাম নাই, চামড়া গুলো বিক্রি করতে পারা গেছে এটায় বড় কথা। তিনি বলেন, চামড়ার বিক্রির টাকা গরিবের হক। চামড়ার এতো দাম কম হচেছ যে, গরিবের ভাগ্যে দুই ১ টাকায় জোটবে, প্রতিদিনের ভিক্ষার মতই। কিন্তু কয়েক বছর আগেও কুরবানীর ঈদের পর কদিন অন্তত কিছু বেশি টাকা পয়সা পেত তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১২ জন্ চামড়া ব্যবসায়ী বা আড়ৎদার রয়েছেন, এর বাইরে প্রতিবছরই প্রায় শতাধিক মৌসুমী ব্যবসায়ী পাড়া মহল্লায় কাচা চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন। সংগ্রহকৃত চামড়া মূলত তারা জেলার ১২ চামড়া ব্যবসায়ীর কাছেই বিক্রি করে দেন। মৌসুমী ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম জানান, এবছর তারা ৫০০-৭০০ টাকা দরে গরুর চামড়া ক্রয় করেছেন, খুব বড় সাইজের হলে ৮০০ টাকা দিয়েছেন। এতো কম দামে চামড়া কিনেও আড়ৎ এ এসে লোকসানের মুখেই পড়েছেন, তাকে সব চামড়ায় বিক্রি করেতে হয়েছে ৬০০ টাকা করে।
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মনজুর হোসেনের কথায়ও চামড়ার দাম না থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। তিনি জানান, এবছর গরুর চামড়া তারা ৪০০-৬০০ টাকা ও খাসির চামড়া ৫০-৬০ টাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনেছেন। তিনি জানান, গতবছরের অনেক টাকায় পড়ে আছে ট্যানারী মালিকদের কাছে, এবছর তাদের চামড়া কিনতে অনেকটায় হিমসিম খেতে হয়েছে। সরকারকে এ শিল্পের দিকে একটু সুদৃষ্টি দিতে হবে, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাঁচলেই চামড়া শিল্পটা এগিয়ে যাবে, যোগ করেন মনজুর হোসেন।
এদিকে সীমান্ত পেরিয়ে যাতে ভারতে চামড়া পাচার হতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারীর কথা জানিয়েছে বিজিবি। ৫৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল সাজ্জাদ সরোয়ার জানান,সম্ভাব্য চামড়া পাচারের রুট গুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঈদের দিন থেকেই আমাদের প্রতিটি বিওপিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কনটেন্ট চুরি, আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুসাহিত করি।