সাইক্লিং এ আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের


ইমরুল কায়েস,পড়ালেখা করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহীর ছেলে ইমরুলের ছোট বেলা থেকেই ছিলো সাইকেলের প্রতি ঝোক । এখন সাইকেলের কারনে ইমরুল ক্যাম্পাসের সবার কাছেই পরিচিতি। সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি, সাইকেল চালিয়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবগুলো উপজেলা ঘুরে দেখেছেন। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার তারাখোলা গ্রামে পাড়াড়ি পথে সাইক্লিং প্রতিযোগিতাও অংশ নিয়ে, সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।  সাইকেল নিয়েই যেতে চান বাংলাদেশের সবগুলো জেলা ও পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে।
 

শুধু ইমরুল না, অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন সাইকেল চালানোর প্রতি। বিশেষ করে তরুন শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের বাহন হিসাবে সাইকেলকেই এগিয়ে রাখছেন। যদিও কারো কারো মনে কিছুটা আক্ষেপও আছে, অনেকেই সাইকেলকে বাহনই মনে করে না এখনও।
ইমরুল বলেন, তিনি বেশ কয়েকটা টিউশনিও করান, বাসায় গিয়ে পড়াতে হয়। সেই সাথে দৈনন্দিন যাতায়াতে তিনি সাইকেলেই স্বচ্ছন্দ্য পান। এই তরুনের মতে সাইকেল সবচেয়ে উত্তম বাহন, ছোট্ট এ শহরের চালাচলের জন্য। অনেক সময় দেখা যায়, যাত্রী না পেলে অটোওয়ালা বসে থাকেন, এতে অনেক সময় নষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে নিজের মত সাইকেল নিয়ে দ্রুতই গন্তব্যে চলে যাওয়া যায়। 


চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহীর মত শহরে সাইকেল সার্ভিস চালু করা যেতে পারে, শহরের নিদিষ্ট পয়েন্টে সাইকেল রাখা থাকবে, সেখান থেকে সাইকেল নিয়ে, স্বল্প দূরত্বে যাওয়া যাবে, আবার কাজ শেষে আবার আরেক পয়েন্টে রেখে দেয়া যাবে। সবার বাসা থেকে সাইকেল নিয়ে বের হতেই হবে এমনটা নয়।
ইমরুলের মতে মেয়েদেরও সাইকেলে অভ্যস্থ হওয়া উঠিত, এতে তারাও খুব সহজে নিরাপদে সহজে গন্তব্যে যেতে পারবে, কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়ায়।

সম্প্রতি মাউন্টেন সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে ইমরুল কায়েস বলেন, ছোট থেকেই সাইকেল চালায়, ফেসবুকে রেইস বাংলাদেশ নামে একটা গ্রুপের মাধ্যমে সাইক্লিং প্রতিযোগিতার বিষয়টা জানতে পেরে অংশ নিয়েছিলাম। গত ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ৪৪ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ফিনিসিং লাইনে পৌচ্ছায়। প্রতিযোগিতায় ৯৪ জন প্রতিযোগির মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছিলো বেশি, রাজশাহী বিভাগ থেকে দুজন অংশ নেয় আমরা। পাহাড়ি পথে সাইকেল চালানো কঠিনই ছিলো, তারপরও উপভোগ্য ছিলো, স্থানীয়রা আমাদের পথে পথে হাত নেড়ে উৎসাহ দিয়েছে। আগামীতে এ ধরনের প্রতিযোগিতা, সারাদেশেই আয়োজন হোক এটা প্রত্যাশা।
বর্তমানে রাস্তায় সাইকেল চালানো নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও আছে ইমরুলের, বলেন  সাইকেলকে কেউ বাহনই মনে করে না, রাস্তায় ঠিকমত সাইড দিতে চাই না। এছাড়াও সড়কের আইনকানুন বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার জরুরী। যারা সাইকেল চানান তাদের আরো সচেতন হতে হবে, হাইওয়েতে কিভাবে চালাতে হয়, সেবিষয়ে জানা উচিত।
 

জাকির হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, ইদানিং মোটরসাইকেল রেসিং করতে দেখা যায় তরুনদের, এটা বেশ ভয়ংকর পর্যায়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে, সেখানে সাইক্লিং অনেকটায় নিরাপদ। সাধারন যাতায়াতে বাহন হিসাবেও অনেক ভাল।
 

সাইক্লিং স্বাস্থের জন্য অনেক উপকারী উল্লেখ করে, বিএমএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাধারন সম্পাদক ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, সব ব্যায়ামের মধ্যে সাইকেল চালানো একটি আনন্দদায়ক ও উপকারী ব্যায়াম। নিয়মিত সাইক্লিং রক্তচাপ,রক্তে শর্করাও চর্বির মাত্রা কমায়। সেই সাথে হৃদরোগের ঝুকিও কমায়। ওজন কমানো, পেশি, সন্ধি সুগঠিত ও সবল করে। ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। মন ফুরফুরে থাকায় মানসিক চাপ কমে।

এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিঠুন কুমার ঘোষ মনে করেন সাইকেলের প্রতি তরুনের আগ্রহ ইতিবাচক দিক। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেকেই সাইকেল নিয়েই ক্যাম্পাসে আসা যাওয়ার করে, পরিবেশ বান্ধব এ বাহনের ব্যবহার যত বাড়ানো যাবে, ততই আমাদের শহরে জীবনের জন্য মঙ্গলই বয়ে আনবে। পৃথিবীর অনেক শহরে পৃথক সাইকেল লেল থাকে, আমাদের দেশেও পৃথক সাইকেল লেন করা যেতে পারে, যাতে সবাই নিরাপদে সাইকেল চালাতে পারে।  


 

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7