রিচার্ড এম.ডরসন (১৯১৬-১৯৮১) ফোকলোরবিদ এবং ইতিহাসবিদ। ডরসন হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান সভ্যতার উপর তিন ডিগ্রি পান, তিনি হার্ভাডে তিনি পড়িয়েছেন (১৯৪৩-১৯৪৪), মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন (১৯৪৪-১৯৫৭)। ১৯৫৭ সালে ডরসন স্টিথ থমসনকে অনুসরণ করে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর প্রোগ্রামের প্রধান হন, পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে এই প্রোগ্রামকে ফোকলোর ইন্সটিটিউটে রূপান্তর করে এবং আমৃত্যু এই ইন্সটিটিউটের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ডরসনের অনেক পেশাদারি কাজ রয়েছে, তার ভিতর অন্যতম হলো জার্নাল অব আমেরিকান ফোকলোর (১৯৫৯-১৯৬৩) সম্পাদনা করা, আমেরিকান ফোকলোর সোসাইটি’র সভাপতি’র (১৯৬৬-১৯৬৮) দায়িত্ব পালন, আমেরিকান ফোকলোর সোসাইটির ফেলোর হিসেবে কাজ করা (১৯৭১-১৯৭২) এবং জার্নাল অব দ্য ফোকলোর ইন্সটিটিউট (পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় জার্নাল অব ফোকলোর রিসার্চ ) এর প্রতিষ্ঠতা (১৯৬৩) এবং সম্পাদকের পালন করে গিয়েছেন। ডরসনের শক্তিশালী নেতৃত্বে আমেরিকান ফোকলোর গবেষণার বিষয় অনেক বেশিমাত্রায় হয়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের অনন্য ইতিহাস এবং সংস্কৃতির খোঁজার ক্ষেত্র। তিনি তাঁর কাজের অভিগমনের রূপরেখা বর্তমানে ক্ল্যাসিক প্রবন্ধের মত হয়ে গেছে (ডরসন ১৯৫৯) এবং তিনি প্রথম আমেরিকান ফোকলোর কে উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন (১৯৫৯)। ডরসন আফ্রিকান আমেরিকান ফোকলোরের ক্ষেত্রসমীক্ষা নির্ভর গবেষকদের ভিতর অগ্রগণ্য, নিগ্রো ফোকটেল ইন মিসিগান (১৯৫৬), উন্মোচন করে সমৃদ্ধি ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় বয়ান। বিশেষভাবে আমেরিকার দক্ষিণ অংশের গল্পের তুলনামূলক যোগাযোগ, যেমন সাদা বৃদ্ধ প্রভু এবং কালো নিন্মবর্ণের চাকর জন বিষয়ক গল্পের বিশ্লেষণ। ডরসন আরো গুরুত্ব আরোপ করেন প্রবাসী ফোকলোরের প্রতি, প্রাথমিকভাবে একগুচ্ছ প্রবন্ধ লেখেন তাঁর ১৯৫২ সালে বইয়ে, যেটির নাম দেন ব্লাডস্টোপার এন্ড বেয়ারওয়াকার্স: ফোক ট্যাডিশন অব দ্য আপার পেনিনসুলা। তিনি দেখান যে ফোকলোর কীভাবে গূঢ় অর্থপূর্ণ ভাব বহন করে আন্তঃজাতিগত যোগাযোগ তৈরি করে এবং কীভাবে আমেরিকার সমাজের ভিতর সম্পর্ক তৈরি করে (ডরসন ১৯৮১), যেমনটি গোষ্ঠীগত ভাবে এবং তেমনিভাবে পরিবর্তনশীল পুরনো ফোকলোর-বিশ্বের ঐতিহ্যের পৃথক প্রবাসী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ডরসন উপকূলবর্তী এলাকায় ক্ষেত্রসমীক্ষার কাজ করে, কাজ করেন মিসিগানের উঁচু দ্বীপগুলোতে এবং ইন্ডিয়ানার উত্তরের শহরগুলোর শিল্প এলাকায় অনেক বইয়ের এবং প্রবন্ধের ভিত্তিতে, যেটি আমাদের সাহায্য করে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক এবং শহুরে সংস্কৃতি সম্পর্কে। ডরসনের প্রধান লক্ষ ছিল আমেরিকার ফোকলোর গবেষণায় কোনপ্রকার সীমাবদ্ধতা না রাখা। তিনি বিট্রিশ ফোকলোর গবেষণার প্রধান ইতিহাস রচনা করে (ডরসন ১৯৬৮), তিনি জাপানিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য দলিল সম্পাদনার কাজ করেন (ডরসন [১৯৬৩] ১৯৭২) এবং আফ্রিকার (ডরসন ১৯৭২) ফোকলোর এবং ফোকলোর গবেষণার আটটি মহাদেশ, অনেক দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের অন্যান্য ভৌগোলিক এলাকার ওপর কাজ করেছেন (ডরসন ১৯৭১)। তিনি অংশগ্রহণ করে অনেক আন্তর্জাতিক আলোচনা, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কথা বলা যেতে পারে যেখানে চারটি মহাদেশ এবং একত্রিশটি দেশ থেকে ফোকলোরবিদগণ তাঁদের নিজস্ব বিষয় উপস্থাপন করে। (ডরসন ফোকলোর ইন দ্য মডার্ন ওয়ার্ল্ড [১৯৭৮] প্রকাশের জন্য তেইশটি প্রবন্ধ সম্পাদনার কাজ করে, তিনি সঠিক এবং প্রভূত বোধ শক্তি সম্পন্ন শিক্ষাদান এবং গবেষণা উপাদানের বিষয়ে সজাগ ছিলেন, তাই তিনি অনেক ফোকলোরের পাঠ্যবই সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন (ডরসন ১৯৭২), যেমন এ হ্যান্ডবুক অব আমেরিকান ফোকলোর (ডরসন ১৯৮৩) অন্যতম। ডরসন দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করতেন যে ফোকলোর গবেষণা এবং পাঠদান অবশ্যই ক্ষেত্রসমীক্ষা নির্ভর হবে এবং এভাবে তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছেন উচ্চতর এবং স্পষ্টবাদী পণ্ডিত হিসেবে, যার কল্যাণে তিনি পাইকারী হারে সরবরাহকারীদের ‘ফেকলোর ’ এর সমালোচক ছিলেন (ডরসন ১৯৭৬)। তিনি তার সমকর্মীদের সঙ্গে তার কাজ নিয়ে আলোচনা করতেন কীভাবে তাদের ফোকলোরে অনুসন্ধান লাভবান করতে পারে, অনেকটায় পারিবারিক ফোকলোরিস্ট পদ্ধতি এবং প্রাপ্ততায়। এইভাবে, ডরসন ছিলেন একজন অনুগত শিক্ষার্থী, সংরক্ষণকারী, বিশ্লেষক এবং ফোকলোরের শিক্ষক, তিনি স্পষ্টাবাদী আদর্শ পণ্ডিত ছিলেন এবং একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী ছিলেন এই ফোকলোর বিদ্যার জন্য। মূললেখক: রবার্ট এ,জর্জ, ইমিরিটাস অধ্যাপক, ইংরেজি এবং ফোকলোর বিভাগ, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলেস, যুক্তরাষ্ট্র।
অনুবাদক: জাফর জয়নাল, গবেষক এবং শিক্ষক, e-mail:jafourjkkniu@gmail.com
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
0 Comments:
Post a Comment