এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ টাউন ক্লাবে, নেসকোর প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময় করে নাগরিক কমিটি। ওই মতবিনিময়ে অনেক সাধারণ গ্রাহকও অংশ নেন। তবে প্রি-পেইড মিটারের বিষয়ে মতবিনিময় হলেও, ঘুরেঘিরে গ্রাহকরা বিদ্যুৎতের ঘনঘন লোডসেডিং সহ বিদ্যুৎ সেবার মান নিয়েই বেশি ক্ষোভ জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়ন সাংবাদিক শামসুল ইসলাম টুকু বলেন, আমরা শুনেছি বিদুৎয়ের ঘাততি নেই, আধিক্য আছে, তাহলে বিদ্যুৎ থাকে না কেন, গ্রাহক হিসাবে এ প্রশ্নের উত্তর আমি জানতে চায়।
শহরের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মারুফুল হক বলেন, আমরা জানি আমরা জানি পানির অপর নাম জীবন, কিন্ত এখন বলতে হয় বিদ্যুৎ এর অপর নাম জীবন, কারন বিদ্যুৎ না থাকলে আমি পানিটাও উঠাতে পারব না। তিনি বলেন, ‘‘ আগে আমাকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেন, তারপর প্রি-পেইড মিটার দেন আমরা মেনে নেব। আমার বিদ্যুৎ সরবরাহ সিস্টেমটা স্মাট করেন, তারপর মিটারও স্মাট বাসান’।
চাঁপাইনববগঞ্জের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে, লেলিন প্রামানিক নামে এক গ্রাহক বলেন, গ্রাহক সেবার মান বাড়ানোর জন্যই পিডিবি থেকে নেসকো হয়েছে, কিন্ত গ্রাহক সেবার মান বাড়েনি। বিদ্যুৎ এর লাইনের সমস্যার কথা বলা হয় আমাদের বলা হয় গাছপালার কারনে সমস্যা হচ্ছে, আগে কি গাছপালা ছিলো না, আগেও গাছপালা ছিলো এখনো আছে। কিন্তু আগের চেয়ে এখন বিদ্যুৎ এর সেবার মান কমেছে, অথচ বিদ্যুৎ এর উৎপাদন বেড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলিনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ নামে এক গ্রাহক বলেন, প্রতিদিনই বিদ্যুৎ অনেকবার করে আসা যাওয়া করে, আগে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী, তারপর প্রি-পেইড মিটার নিয়ে হুড়োহুড়ি করা উচিত।
বিদ্যুৎ এর সমস্যার বিষয়ে গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তরে, নেসকো বিতরন বিভাগ ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অলিউল আজিম বলেন, রাজশাহী বিভাগের সঞ্চালন লাইন সংস্কারসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে, সেগুলোর কাজ শেষ হলে আরো ভাল সেবা পাবেন গ্রাহকরা। তিনি বলেন, এ কাজগুলো এখন চলমান থাকলেও, শীতকালে আরো গতি পাবে, কারন যেকোন সংস্কার কাজ করতে গেলে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেই করতে হয়। তাই শীতকালকেই আমরা বেছে নেই সংস্কার কাজ করার জন্য।
নেসকোর প্রকৌশলীর এমন বক্তব্যের পেক্ষিতে,নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা এ্যাড সাইদুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আপনারায় বলছেন বিদ্যুৎতের সঞ্চালন লাইনের উন্নয়ন কাজ শীতকালে নেসকো করবে, সেহেতু এই কাজগুলো শেষেই মিটার লাগানোর বিষয়টি ভাবার জন্য বলব।
নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভায়, এর সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘‘ আমরা দাবি করছি জোর করে কোন গ্রাহকের বাড়িতে প্রি-পেইড মিটার বসানো যাবে না। পাড়ায় পাড়ায় নেসকোর পক্ষ থেকে গনশুনানী করতে হবে, যদি গ্রাহকরা আগ্রহী হয় তাহলে নেসকো মিটার বসাবে।
মতবিনিময় সভায় প্রি-পেইড মিটার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম চৌধুরী প্রি-পেইড মিটারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে গ্রাহকদের সুবিধার কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রতিটি গ্রাহককে বুঝিয়েই তারা প্রি-পেইড বসানোর কাজটি করবেন। ২০২২ সালের মধ্যে সব গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার এ প্রকল্প শেষ হবে বলেও জানান তিনি।
প্রি-পেইড মিটার বসানোর জন্য কোন টাকা লাগবে না, সেই সাথে গ্রাহকের এখন যে মিটার আছে, সেটিও জমা দিতে হবে না বলে উল্লেখ করেন প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম চৌধুরী।
মতবিনিময় সভায় নেসকোর বিতরন বিভাগ ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা,নাগরিক কমিপির আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন আহমেদ বাদশা, নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা এ্যাড. আবু হাসিব, জাসদ নেতা আব্দুল হামিদ রুনু, আবু হেনা বাবলুসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
0 Comments:
Post a Comment