সেইদিন এই মাঠ: জীবন থেকে মৃত্যুর দিকে যাত্রা

সূচনা


জীবনানন্দের (১৮৯৯-১৯৫৪) জীবনদশায় অনেক লেখায় প্রকাশিত হয়নি। মৃত্যুর পরে যেমন প্রকাশিত হয় ‘রূপসী বংলা’ (১৯৫৭)। কবির মৃত্যুর পর কবির উপন্যাস এবং ছোটগল্পগুলি প্রকাশিত হয়। মৃত্যুর আগে ৫টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত কবির। ‘রূপসী বাংলা’র অন্যতম একটি কবিতা ‘সেইদিন এই মাঠ’। কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। ৫টি পঙ্কতি রয়েছে এই কবিতায়।

এই প্রকৃতিতে মানুষের মৃত্যু আছে

 
মানুষের প্রতিদিনকার জীবনের সঙ্গে মৃত্যুর প্রবহমানতা রয়েছে। মানুষের অবচেতনে এই জীবন ক্রমেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। জীবন যেন আমাদের কাছে অনেকটা ‘হিসেবে করে অপচয়’। জানি কিন্তু সেই অদ্ভুত এক আধাঁরেই আমাদের ডুব দিতে হয়, মনের পাল্লা ঠেলে, আমাদের জাগতিকতায় ভেসে বেড়াতে হয়।
চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়
পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া এবং পরবর্তী সময়ের বিষয়ে মানুষের মনে এক কল্পনা তৈরি কার থাকে গোপনে। তার মনে সন্দেহ মিশ্রিত হাহাকার থাকে। মৃত্যুর পর কী আগের মত জোছনা প্লাবিত করবে আকাশ, সেই যে ‘এই নদী নক্ষত্রের তলে/ সেদিনো দেখিবে স্বপ্ন-’। প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসে, আসা যাওয়ার খেলা চলমান থাকে। চলে যাওয়ার পরও মানুষের স্মৃতি থেকে যায়, থেকে যায় উত্তরসূরী। তখন আমাদের গল্পগুলি থেকে যায়। কবি তখন বলেন,‘পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে র’বে চিরকাল;-’।

আজি বিজন ঘরে


প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির ভিতর দিয়ে মানুষের জীবন কেটে যায়। তবুও জীবনের চারিদিকে মৃত্যুর আঁধার ছড়িয়ে থাকে। নিশীথ রাতে প্রকৃতির স্তব্ধতার ভিতর দিয়ে আমরা যে, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি, তাতে চালতাফুল কিংবা শিশিরের পরশ আমাদের জীবনকে রঙিন করে দিয়ে যায়। এতকিছুর পর মানুষের জীবনের মতই তার সৃষ্টি করা- এশিরিয়া সভ্যতা এক সময় মাটির ধুলোয় রূপান্তরী হয়ে যায়, যেমনটা প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার দক্ষিণ দিকে তথা ইরাকের কিছু অংশে খ্রিষ্টপূর্বে ১৮৯৪ অব্দে তৈরি করা আমোরিট সা¤্রাজ্যের নগরীও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

শুধু ছাই হয়ে যাওয়া


শুধু ধুলি, শুধু ছাই হয়ে মিশে যাওয়া আমাদের নিয়ত। পরিবর্তনহীন এই ভাগ্য নিয়ে জীবনানন্দের এই কবিতা তাই মানব জীবন এবং প্রকৃতির এক শাশ্বত বাণীর শৈল্পিক রূপ মাত্র। 

 জাফর জয়নাল
 লেখক: সাহিত্য সমালোচক

jafourjkkniu@gmail.com





 

 

 

 

 

 

 

 

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About Jafour Joynal

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7