বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ হিসেবে সার্বজনীন স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বনন্দিত মার্টিন লুথার কিংয়ের (১৯২৯-১৯৬৮) মতো জনগণকে শুধু একটি ‘স্বপ্নের কথা’ বলতে নয় বরং বঙ্গবন্ধু বাঙালির জাতীয় মুক্তির স্বপ্নপূরণ তথা স্বাধীনতা অর্জনে সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানিয়েছিলেন তাঁর এই ভাষণের মাধ্যমে। ১৯ মিনিটের এই ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। বাঙালিকে স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উদ্দীপ্ত ও দীক্ষিত করে। অসাধারণ এই বক্তব্য যেমন সারগর্ভ, ওজস্বী ও যুক্তিযুক্ত, তেমনি তির্যক, তীক্ষœ ও দিকনির্দেশনাপূর্ণ। অপূর্ব শব্দশৈলী, বাক্যবিন্যাস ও বাচনভঙ্গি একান্তই আপন, নিজস্ব বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। এমন ভাষণ বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। আর এই জন্যই এটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এমন গতিময়, তাৎপর্যময়, সুদূর প্রসারী ভাষণ ইত:পূর্বে কোন নেতা দিয়েছেন বলে জানা নেই।
একটি কালজয়ী ভাষণের সূচনাপর্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। There is nothing like a good beginning for a speech . সমসাময়িক ঘটে যাওয়া বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তিনি তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণের অবতারণা করেন। এটি মূলত পৃথিবীর মানচিত্রে একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় বার্তা ও তার স্বাভাবিক অনুযাত্রায় পাকিস্তানের তদানীন্তন রাষ্ট্র কাঠামোর পূর্বাঞ্চলের পরিসমাপ্তি প্রজ্ঞপ্তি ও বিবরণী। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস ও বাঙালিদের অবস্থা ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে বাঙালিদের স্বরূপ তুলে ধরা, শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাঙালিদের অধিকার আদায় ও সমস্যা সমাধানে তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা, সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ, প্রতিরোধ সংগ্রাম শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত, শত্রুর মোকাবেলায় গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন এবং যেকোন উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান। ভাষণে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের অনিবার্যতার কথা যেমন ঘোষণা করলেন তেমনই অত্যন্ত দূরদর্শীতা ও বিচক্ষণতার সাথে পাকিস্তানী শাসকদের বিচ্ছন্নতাবাদী নেতা হিসাবে তাঁকে চিহ্নিত করার ফাঁদে পা দিলেন না। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” যেমন বললেন; তেমনি চার শর্তের জালে ফেললেন শাসকের ষড়যন্ত্রের দাবার ঘুঁটি। তার চারটি দাবী হলো ১। সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে ২। সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে ৩। যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সেসব হত্যাকা-ের বিচার করতে হবে এবং ৪। জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
সুদীর্ঘ একশত নব্বই বছরের বৃটিশ শাসনের নাগপাশ ছিন্ন করে দ্বিজাতিতত্বের জটিল সমীকরণে ভারত বর্ষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের উত্তরপূর্ব ও উত্তর পশ্চিম এলাকাসমূহের সমন্বয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। চরম সাম্প্রদায়িক এই নতুন রাষ্ট্রের দুটি অংশের মধ্যে কার্যত ধর্ম ছাড়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিল বিস্তর অমিল। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খাদ্যাভাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য বা অর্থনৈতিক কাঠামো কোনটিতেই মিল ছিল না। কার্যত বাঙ্গালি সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চল পুনরায় পশ্চিমের রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের শিকার হয়। পরের ২৩ বছর অর্থাৎ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব পর্যন্ত ঔপনিবেশিক কায়দায় পশ্চিমাদের এই শোষণ চলতেই থাকে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের প্রথম দিকে বাঙালির উপর এই শোষণ ও ইয়াহিয়ার নির্বাচিত দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের অনীহা তুলে ধরেন। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে ভুট্টো ইয়াহিয়া চক্রের ষড়যন্ত্র এ ভাষণে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। ক্যাবিক এই ভাষণে দেশবাসীর করণীয় সম্পর্কে তিনি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। কোর্ট-কাচারি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। জনগণের খবর প্রচার না করলে রেডিও টেলিভিশন বন্ধ করলেও মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মচারীদের ২৮ তারিখে বেতন নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। খাজনা ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করার মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক উৎসে আঘাত হানেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে হিন্দু মুসলিম বাঙালি অবাঙালি সকলকে রক্ষা করার কথা বলেন ।
একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের মধ্যে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ইয়াহিয়া ও তার সহকর্মী ভুট্টোর বিভিন্ন কর্মকান্ড থেকে বুঝেছিলেন পাকিস্তানীরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না’। “প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল” এই উক্তির মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রমণের বিরুদ্ধে একটি গেরিলা যুদ্ধের ইঙ্গিত দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন রাজনীতির যাদুকর। স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ ঘোষণা দিলে, বর্বর শাসকগোষ্ঠী ওই দিনই ঢাকার ১০-২০ লক্ষাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করত। এই প্রসঙ্গে The Daily Telegraph পত্রিকার প্রতিনিধি David Lashak ঢাকা থেকে প্রেরিত ‘The end of the old Pakistan শিরোনাম যুক্ত এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন,On Sunday [March 7] Sheikh Mujib came as near to declaring this [Independence] as he could without inviting immediate harsh reaction from the army.
একটি কালজয়ী ভাষণের সূচনাপর্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। There is nothing like a good beginning for a speech . সমসাময়িক ঘটে যাওয়া বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তিনি তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণের অবতারণা করেন। এটি মূলত পৃথিবীর মানচিত্রে একটি নতুন দেশের অভ্যুদয় বার্তা ও তার স্বাভাবিক অনুযাত্রায় পাকিস্তানের তদানীন্তন রাষ্ট্র কাঠামোর পূর্বাঞ্চলের পরিসমাপ্তি প্রজ্ঞপ্তি ও বিবরণী। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস ও বাঙালিদের অবস্থা ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে বাঙালিদের স্বরূপ তুলে ধরা, শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাঙালিদের অধিকার আদায় ও সমস্যা সমাধানে তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা, সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ, প্রতিরোধ সংগ্রাম শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত, শত্রুর মোকাবেলায় গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন এবং যেকোন উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান। ভাষণে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের অনিবার্যতার কথা যেমন ঘোষণা করলেন তেমনই অত্যন্ত দূরদর্শীতা ও বিচক্ষণতার সাথে পাকিস্তানী শাসকদের বিচ্ছন্নতাবাদী নেতা হিসাবে তাঁকে চিহ্নিত করার ফাঁদে পা দিলেন না। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” যেমন বললেন; তেমনি চার শর্তের জালে ফেললেন শাসকের ষড়যন্ত্রের দাবার ঘুঁটি। তার চারটি দাবী হলো ১। সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে ২। সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে ৩। যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সেসব হত্যাকা-ের বিচার করতে হবে এবং ৪। জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
সুদীর্ঘ একশত নব্বই বছরের বৃটিশ শাসনের নাগপাশ ছিন্ন করে দ্বিজাতিতত্বের জটিল সমীকরণে ভারত বর্ষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের উত্তরপূর্ব ও উত্তর পশ্চিম এলাকাসমূহের সমন্বয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। চরম সাম্প্রদায়িক এই নতুন রাষ্ট্রের দুটি অংশের মধ্যে কার্যত ধর্ম ছাড়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিল বিস্তর অমিল। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খাদ্যাভাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য বা অর্থনৈতিক কাঠামো কোনটিতেই মিল ছিল না। কার্যত বাঙ্গালি সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চল পুনরায় পশ্চিমের রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের শিকার হয়। পরের ২৩ বছর অর্থাৎ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব পর্যন্ত ঔপনিবেশিক কায়দায় পশ্চিমাদের এই শোষণ চলতেই থাকে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের প্রথম দিকে বাঙালির উপর এই শোষণ ও ইয়াহিয়ার নির্বাচিত দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের অনীহা তুলে ধরেন। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে ভুট্টো ইয়াহিয়া চক্রের ষড়যন্ত্র এ ভাষণে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। ক্যাবিক এই ভাষণে দেশবাসীর করণীয় সম্পর্কে তিনি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। কোর্ট-কাচারি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। জনগণের খবর প্রচার না করলে রেডিও টেলিভিশন বন্ধ করলেও মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মচারীদের ২৮ তারিখে বেতন নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। খাজনা ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করার মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক উৎসে আঘাত হানেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে হিন্দু মুসলিম বাঙালি অবাঙালি সকলকে রক্ষা করার কথা বলেন ।
একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের মধ্যে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ইয়াহিয়া ও তার সহকর্মী ভুট্টোর বিভিন্ন কর্মকান্ড থেকে বুঝেছিলেন পাকিস্তানীরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না’। “প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল” এই উক্তির মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রমণের বিরুদ্ধে একটি গেরিলা যুদ্ধের ইঙ্গিত দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন রাজনীতির যাদুকর। স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ ঘোষণা দিলে, বর্বর শাসকগোষ্ঠী ওই দিনই ঢাকার ১০-২০ লক্ষাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করত। এই প্রসঙ্গে The Daily Telegraph পত্রিকার প্রতিনিধি David Lashak ঢাকা থেকে প্রেরিত ‘The end of the old Pakistan শিরোনাম যুক্ত এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন,On Sunday [March 7] Sheikh Mujib came as near to declaring this [Independence] as he could without inviting immediate harsh reaction from the army.
৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার কৌশলী ঘোষণা। বাংলার উচ্ছ্বসিত জনতা পেয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার ডাক। জনগণ যুদ্ধের প্রস্তুুতি নিতে শুরু করলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলতে থাকে দেশ। সারাদেশে উড়তে থাকে লাল সবুজের পতাকা।
বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও অসাধারণত্ব বহুমাত্রিক। বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিচার করলেও এ ভাষণ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। কেউ কেউ এ ভাষণ কে আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ স্পিচ বা মার্টিন লুথার কিং এর বক্তব্য (I have a dream that one day this nation will rise up and live out the true meaning of its creed. We hold these truths to be self evident that all men careated equal. I have a dream that my four children will one day live in a nation where they will not be judged by the colour of their skin but by the content of their characterভাষণের সঙ্গে তুলনা করেন। এই তুলনাকে যথাযথ মনে হয় না। ঐ দুটি ভাষণের প্রেক্ষাপট আলাদা- বঙ্গবন্ধুর মতো বিশাল হ্রদয়ের মানুষের আকাশ ছোঁয়া প্রত্যাশার চাপ এবং প্রবল শত্রুপক্ষের মরণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আশংকার মধ্যে তাঁদের ঐ ভাষণ দিতে হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে উইনস্টোন চার্চিলের একটি ভাষণের সঙ্গেই শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছুটা তুলনা চলতে পারে। চার্চিল তাঁর সেই বিখ্যাত ভাষণে বলেছিলেন Ôwe Shall fight on the beaches, we shall fight on the landing grounds, we shall fight in the fields and in the streets, we shall fight in the hills, we shall never surrender'.'. তিনি শত্রুপক্ষকে আক্রমণ করতে চেয়েছিলেন মিত্রপক্ষের প্রবল শক্তিশালী অবস্থান থেকে কিন্তু বঙ্গবন্ধু ‘আমরা ভাতে মারবো, পানিতে মারবো’ কথাগুলি উচ্চারণ করেছিলেন সর্বাধুনিক অস্ত্র, যুদ্ধ প্রযুক্তি ও উন্নত কৌশলসমৃদ্ধ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য। তাঁর অবস্থান নিরস্ত্র, কিন্তু বিপুল জনসমর্থনধন্য জননেতার অসম-অবস্থান। তবে জনশক্তি যেহেতু যে কোনও মরণাস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী-বঙ্গবন্ধু সেই শক্তির অবস্থান থেকেই কথাগুলো উচ্চারণ করেছিলেন। স্পষ্টতেই বঙ্গবন্ধু গেরিলা পদ্ধতিতে শত্রুর মোকাবিলা করতে বলেছিলেন। তাই চার্চিল এবং বঙ্গন্ধুর শত্রুর মোকাবিলার উদ্দেশ্য এক হলেও পথ ছিল ভিন্ন। আমাদের বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ওই সব ভাষণের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে একটা জাতি গঠন প্রক্রিয়ার পূর্ণতা এবং একটা জনগোষ্ঠির শত শত বছরের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা-আকাঙ্খা স্বপ্ন ও বিপুল আত্মত্যাগের ইতিহাস যুক্ত রয়েছে। দার্শনিক নিৎসে রাষ্ট্র গঠনকেই সর্বাধিক মানবিক কর্ম বলে আখ্যাত করেছেনে। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র গঠনের এই মহৎ কাজটি সম্পন্ন করেছিলেন বলেই আমরা বলি তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং বাঙালি জাতির পিতা।
লেখকঃ মহাঃ জিয়াউল হক
সহকারী অধ্যাপক
ইতিহাস বিভাগ
আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ।
তথ্যসূত্রঃ
বাঙালির রাষ্ট্রভাবনা ও বঙ্গবন্ধু : হারুন-অর-রশিদ
স্মৃতি ঃ ১৯৭১ প্রথমখন্ড : রশীদ হায়দার (সম্পাদনা)
বাংলাদেশ : জাতি রাষ্ট্রে উদ্ভব : আবুল মাল আব্দুল মুহিত
একাত্তরের দিনগুলো : জাহানারা ইমাম
নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু : রাজীব পারভেজ (সম্পাদনা)
আমাদের ইউটিউব চ্যালেন সাবস্কাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t
কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।