খাদিজার সাফল্যেও দিনমজুর বাবার কপালে পড়া চিন্তারভাজ কাটছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের রানীবাড়ি এলাকায় বেড়ে উঠা খাদিজার। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে খাদিজা ৪র্থ। দিনমজুর বাবা জালাল উদ্দীনের  আয়ে কোন করমে চলে খাদিজাদের পরিবার।

অভাব অনটনে বেড়ে উঠা খাদিজা বরবরই ছিলো মেধাবী, তাই বাবা মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সবসময়ই উৎসাহ দিয়েছেন, কষ্ট হলেও খরচ জুগিয়েছেন। বাবার কষ্টের প্রতিদানও মিলেছে, এবার খাদিজা রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, মেয়ের এমন সাফল্যে খুশি দিনমজুর বাবাও,তবে সেই খুশি ছাপিয়ে এখন জালাল উদ্দীনের কপালে চিন্তার ভাজ। রংপুরে মেয়ের পড়ালেখা, কিভাবে জোগাবেন খরচ, তাহলে কি আমার মেয়ের ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন , স্বপ্নই থেকেই যাবে নিজেই প্রশ্ন করেন জালাল উদ্দীন।

খাদিজার মা জোসনা বেগম বলেন, নিয়মিত লেখাপড়া করত আমার মেয়ে, সে সবসময়ই বলত, মা আমি ডাক্তার হব, মানুষের সেবা করব। তার পরিশ্রমের ফল পেয়েছে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ হয়েছে। যদিও পড়ালেখার খরচ কিভাবে চলবে এ নিয়ে আমরা চিন্তায় পড়ে গেছি, তবুও মা হয়ে আশাকরি কোন সুযোগ অবশ্যই আসবে, কোনভাবে আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে।

খাদিজা তার এ সাফল্যের পেছনে তার শিক্ষক ও বাবা মায়ের সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, বড় হয়ে কি হবে, এমন কেউ প্রশ্ন করলে আমি সবসময়ই বলতাম ডাক্তার হব, আমার স্বপ্ন পূরণের পথটা রচিত হয়েছে। এখন সেই পথধরে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। যদিও দারিদ্রতা আমার পথচলায় একটা বাধা, তবুও বিশ্বাস সেটিও জয় করে আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।

যেভাবে সংবাদের শিরোনাম খাদিজা 


মেধাবী খাদিজাকে সবার সামনে আনেন শিবগঞ্জ উপজেলার রানিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জালাল উদ্দীন। তিনি নিজেও সাংবাদিকতার সাথে আছেন দীর্ঘদিন। শনিবার নিজ ফেরবুক ওয়ালে খাদিজার সাফল্যের কথা তুলে ধরে, তার পথ চলার সাথে এগিয়ে আসার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি নিজে সাংবাদিকদের ফোন করে খাদিজার সংবাদটি গনমাধ্যমে তুলে ধরার অনুরোধ জানান। সেই সূত্র ধরেই বিভিন্ন গনমাধ্যমে চলে আসে শিবগঞ্জের খাদিজার সংগ্রামী পথ চলার কথা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে রীতিমত ভাইরাল।

ভর্তির জন্য এগিয়ে এসেছেন পুলিশ সুপার

রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া দিনমজুর জালাল উদ্দীনের  মেয়ে খাদিজার ভর্তিতে এগিয়ে এসেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম। তিনি শনিবার বিকালে তার কার্যালয়ে খাদিজাকে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। এসময় খাদিজার বাবা জালাল উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে খাদিজা জানান, তার বিষয়টি জানতে পেরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার এগিয়ে এসেছেন, ভর্তির জন্য সহায়তা করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় কলেজ শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, খাদিজার ভর্তির প্রাথমিক ধাপটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে খাদিজার মেডিকেলে পড়ার সময়কালে যদি কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সহায়তা নিয়ে এগিয়ে না আসে, তাহলে তার স্বপ্নপূরণ অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে। আমি আশাকরি খাদিজার স্বপ্ন পূরনে এমন কেউ এগিয়ে আসবেন।





কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7