একটি গুইসাপ বাঁচাতে সাহসিক অভিযান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইউসুফনগর-পুলপাড়া বিলে চারদিন ধরে কারেন্ট জালে আটকে থাকা একটি গুইসাপকে উদ্ধার করেছে সেভ দ্য নেচারের কর্মীরা। বুধবার বিকালে দেড় ফুট দৈর্ঘ্যরে গুইসাপটি উদ্ধার করে নিরাপদস্থানে অবমুক্ত করা হয়। সেভ দ্য নেচার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী রবিউল হাসান ডলার জানান, ইউসুফনগর-পুলপাড়ার একটি বিলে মাছ শিকারীদের অবৈধ কারেন্ট জালে একটি গুইসাপ আটকে আছে এমন খবর পেয়ে সেখানে যান সেভ দ্য নেচার’র কর্মীরা। হাঁটু পানিতে নেমে তারা গুইসাপটির কাছে যান। প্রায় একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রাণীটিকে। ততোক্ষণে আশেপাশে জড়ো হয়ে যান এলাকার অনেক মানুষ। কেউ কেউ সহযোগিতার জন্য এগিয়েও আসেন। তিনি বলেন ‘আমরা যখন গুইসাপটিকে উদ্ধার করি তখন সেটি অনেকটা নিস্তেজ অবস্থায় ছিল। হয়তো আর কিছুটা সময় পার হলে গুইসাপটি মারাও যেতে পারতো। গুইসাপটির সামনের দিকের ডান পা আটকে গেছিলো জালে। খুব সতর্কতার সঙ্গে গুইসাপটিকে জালে কেটে উদ্ধার করে স্থলে আনা হয়’।  
গুই সাপটিকে উদ্ধার করতে পেরে উচ্ছ¡াসিত সেভ দ্য নেচারের কর্মীরা। সেভ দ্য নেচারের কর্মী কামরুজ্জামান, সেলিম রেজা, কায়সার ইমাম জানান, উদ্ধার অভিযান শুরুর সময় স্থানীয়রা বিভিন্ন কু-সংস্কারের কথা বলছিলেন। কিন্তু পরে তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেন গ্রামবাসী। কেউ কেউ বলেন- আল্লাহ ছেলেগুলোর অনেক ভাল করবে। তবে প্রশংসা শোনার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী হিসেবে বিপন্ন একটি প্রাণীর প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন তারা। এ নিয়েই তাদের সীমাহীন সন্তুষ্টি আর ভাললাগা।
বাংলাদেশে তিন প্রাজাতির গুইসাপ দেখা যায়। সোনা গুই, কালো গুই ও রামগাদি বা বড়গুই। এদের প্রতিটি প্রজাতিই বিপন্ন। গুইসাপ নিয়ে মানুষের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা থাকলেও প্রকৃতিপক্ষে এটি খুবই নিরীহ প্রাণী।  মানুষ দেখলেই পালিয়ে যায়। গুইসাপকে উপকারী প্রাণী হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। কারণ গুইসাপ বিষধর সাপ ও ক্ষতিকর পোকপাকড় খায়। পোকামাকড় খেলে ফসলেরও উপকার করে। তাছাড়া প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এই সরীসৃপ প্রাণীটির ভূমিকা অপরিসীম। খাদ্যশৃঙ্খলেও বিশেষ ভূমিকা রাখে প্রাণীটি।


About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7