ফসলের মাঠে হলুদের সমারোহ


আমন ধান কেটে ফুরসতে নেই কৃষকেরা। শুরু হয়েছে সরিষা চাষ। বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে শুধুই হলুদ চোখে পড়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। হলুদ ফুলে ভরে আছে জমি। ফুলের মৌ মৌ গন্ধ সুবাস ছড়াচ্ছে পুরো এলাকায়। আকৃষ্ট করছে মৌমাছিসহ সকল প্রকৃতি প্রেমিককে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, ফলন ভাল হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরিষা ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। চারিদিকে তাকালে যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার। কখনো কখনো সরিষার ক্ষেতে বসছে পোকাখাদক বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁক। অনেকটা প্রতিকূল আবহাওয়ার পরও এ বছর  ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে ।

সরজমিন উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের দায়েমপুর ও চাড়া বিল ঘুরে দেখা যায়, সরিষার ফুলে ফুলে ও মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে এলাকার ফসলি সরিষার ক্ষেত। মাঠের চারিদিক যেন হলুদে হলুদে পরিপূর্ণ। এক দেখাতেই মন কাড়বে দর্শনার্থীদের। সরিষা ফুলের শোভা আরো বেড়ে যায়,অসংখ্য মৌমাছির দল যখন গুণগুনিয়ে মধু আহরণে ব্যস্ত থাকে।

কৃষক জামাল হোসেন, মনিরুল ও আব্দুর রাজ্জাক জানান, সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফুল ফুটেছে বলে ভালো ফলনও আশা করছেন কৃষকরা। বিঘা প্রতি সরিষা আবাদে প্রায় ৬ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে। তবুও তারা লাভের আশা করছেন। এ বছর অনেকেই আগাম সরিষা আবাদ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা।

সরিষার ফুলে ফুলে বর্ণিল জমিগুলোতে দূর দূরান্ত থেকে স্কুল কলেজের সৌখিন প্রকৃতি প্রেমীরা বেড়াতে আসছেন। আবার সরিষার ফুলের সৌন্দর্যকে ধরে রাখার জন্য অনেক তরুণ-তরুণী নিজের ছবির সাথে সরিষার ফুলের ছবি ধরে রাখছেন।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাকিব বলেন, এবার সরিষা চাষে কৃষকদের ভাগ্যবদল হবে। সরিষার আবাদ ভালো হওয়াতে তাদের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক অনেক কম লাগে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, সরিষা চাষ করে মানুষ শুধু তেল-ই তৈরি করে না। এই সরিষা ভাঙ্গিয়ে খৈল ও গাছ থেকে ভূষি তৈরি হয় যা গরুর ভালো খাদ্য এবং ভালো জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। পলি অঞ্চলেও সরিষার ব্যাপক চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সরকার জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষা আবাদে আগ্রহী বেশি সংখ্যক কৃষকরা। উপজেলার উচু জমির পাশাপাশি পলি অঞ্চলে বন্যার পর মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর ব্যাপক সরিষার উৎপাদন সম্ভব। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে ও কোনো রকম রোগ বালাই না হলে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশা করছেন। তবে সরকারের সরিষা প্রনোদনা থাকায় সরিষা আবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। এবার উপজেলার ২ হাজার কৃষককে সরিষার প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। এবার আবাদ হয়েছে টরি-৭,বারি-১৪,বারি-১৫ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা।

 

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন https://bit.ly/2Oe737t কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

0 Comments:

Post a Comment

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7