গরিবের হক নিয়ে ছিনিমিনি, সবার মাঝে ক্ষোভ

 
কুরবানী ঈদে কুরবানীকৃত পশুর চামড়া বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায়, তা গরিব অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়। কিন্তু এবার সেই গরিবের ভাগ্যেও জুটবে সামান্যই। কারণ এবার চামড়ার দাম যেন তলানীতে ঠেকেছে, আর এ নিয়ে পাড়া মহল্লাসহ সবখানেই সবার মাঝেই সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের। ক্ষোভ ছড়িয়েছে সামাজিক মাধ্যমেও।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাধারণত পাড়া মহল্লায় প্রত্যেকটি জামায়াতে কুরবানীর চামড়া জমা দেন ওই জামায়াতের সদস্যরা। জামায়াতের কমিটি সেই চামড়া বিক্রি করে দেন। এইবার চামড়া বিক্রি করতে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে বলে জানান, স্বরুপনগর জামায়াতের চামড়া বিক্রির দ্বায়িত্বে থাকা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও চামড়া কিনতে একাধিক ব্যবসায়ী আগে থেকেই যোগাযোগ করত, আর ঈদের দিন একাধিক ব্যবসায়ী এসে দামদর করত, আমাদেরও সুবিধা হত যে বেশি দাম দিত তার কাছেই বিক্রি করতাম।  কিন্তু এবার আমাদেরই চামড়া ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করতে হয়েছে, চামড়া গুলো কেনার জন্য, তারপরও অনেক অনুরোধ করে গরুর চামড়া ৩৩০টাকায় বিক্রি করেছি, আর খাসি মান ভেদে ২০-৩০ টাকা করে দিয়েছে। আমরা তাও গরুর চামড়ায় ৩৩০ টাকা পেয়েছি, অন্য জামায়াতে আরো কমে বিক্রি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হরিপুর মিঞা পাড়া জামায়াতে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১২০-২০০ টাকার মধ্যে, আর খাসির চামড়া ২৫ টাকা। এ তথ্য জানিয়ে ওই জামায়াতের নাহিদুল হক বলেন, গতবারও চামড়ার দাম কমছিলো তবে এতো কম ছিলো না, কয়েক বছর আগে যেখানে গরুর একটা চামড়ার দাম ২ হাজার টাকা ছিলো তা নেমে এসেছে ১২০ টাকায়, কি বলব এটা গরিব মানুষের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। চামড়ার টাকা তো গরিব অসহায় মানুষের হক, কিন্তু একটা ছাগলের চামড়া বিক্রি করে ২৫ টাকা পাওয়া গেছে, এটা একজনকে দিলেই শেষ, তাহলে অন্যরা বঞ্চিত হলো না।
কুরবানী ঈদের সময় চামড়া সংগ্রহ করেন অনেক এতিম খানা, মসজিদ মাদ্রাসা। পরে সেই চামড়া বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায়, তা সারাবছরের প্রতিষ্ঠানের খরচের একটা বড় অংশ পূরণ করে। কিন্তু গত বছর থেকে চামড়ার এমন তলানী মূল্যের কারণে তারাও পড়েছেন সমস্যায়।
কেন চামড়া মূল্যহীনতা এ বিষয়ে সঠিক কোন বাখ্যা নেই জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কাছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মনজুর হোসেনের মত, ট্যানারী মালিকদের কাছে টাকা পড়ে থাকায় চামড়া ব্যবসায়ীরা ঝুকি নিতে চাননি, ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিলো না, এমনিতেই যা পেয়েছেন তা কিনেছেন, এতে করে কমেছে দাম। তিনি বলেন, আড়ৎ গুলোতে গরুর চামড়া মান ভেদে ১০০-২০০-৩০০ টাকা আর খাসি ২০-৩০ টাকার মধ্যে কিনেছে।
এদিকে সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ভাল হয়েছে বলে জানান মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, ৯০ সালের আগে এই রকম নিয়ম ছিলো না, তখন চামড়ার দামও ভাল ছিলো, আমরাও লাভবান হয়েছি। তবে এ সিদ্ধান্ত ১০ দিন আগে হলে ভাল হত, তাহলে গরুর চামড়া ১০০ টাকা হত না, এবার খুববেশি কেউ লাভবান হতে না পারলেও সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়েছে।





কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7