নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাটকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়তে চাই : সৈকত জোয়ার্দ্দার


চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : দলীয় মনোনয়ন পেতে কতটুকু আশাবাদী...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই আমি আশাবাদী। স্কুলজীবন থেকেই বাবার হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আমার হাতেখড়ি। কলেজে পড়ার সময় পুরোপুরি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি। ধীরে ধীরে রাজনীতিতে দক্ষতা লাভ করে আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নিতে পেরেছি। কাজেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে এবার দলীয় মনোনয়ন পাবো বলে আশা করছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : আপনার কোন কোন কর্মকা- মনোনয়ন পেতে ভূমিকা রাখবে...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : ১৯৮২ সালে শাহমখদুম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। এরপর রাজশাহী কলেজে ভর্তি হই। সেখানেও আমি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি প্রায় ৩ বছর। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। ওই সময় আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলাম। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, স্বৈরাচারীবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ছিল তখন রাজপথে একই সঙ্গে অর্থাৎ পাশাপাশি থাকার সময়ই আমার পাশে থাকা সেই সময় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম দুলাল পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। ওয়ান ইলেভেনের পরও আমি সোচ্চার ছিলাম। সে সময় কেন্দ্রের এমন কোনো কর্মসূচি নেই, যেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম না। বলতে পারি, আমি আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত এক কর্মী। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিকভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বলি আর রাজশাহী বলি যখন আওয়ামী লীগের দুঃসময় চলছিল সেই সময় হাল ধরেছি। বিশ্বাস, এসব কর্মকা-ই আমার মনোনয়ন পেতে সহায়ক হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : আপনার প্রতি দলীয় নেতাকর্মীদের মনোভাব কেমন...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সবসময়ই সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই যে, আমি সৈকত জোয়ার্দ্দার হতে পেরেছি, কেন্দ্রীয় যুবলীগে জায়গা করে নিতে পেরেছি; এসবই কিন্তু নেতাকর্মীদের কারণে। তাদের সমর্থন এবং ভালোবাসা না থাকলে আমি কিন্তু এতদূর আসতে পারতাম না। আরেকটি কথা না বললেই নয়, আমি যে নির্বাচনী গণসংযোগ চালাচ্ছি, সে গণসংযোগেও নেতাকর্মীরা কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসছেন; এটা সুসম্পর্ক না থাকলে সম্ভব নয়। আমি বিশ্বাস করি, অতীতের মতো আগামীতেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। এতে আমি দলীয় নমিনেশন পাই, বা না পাই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দল কতটুকু দূর হতে পারে...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : আওয়ামী লীগ দেশের বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। স্বাভাবিকভাবেই এ দলে কিছুটা কোন্দল থাকতেই পারে। তবে সেটা মারাত্মক তা বলা যাবে না। দেখুন, আমি কোন্দল বলব না; নির্বাচন এলেই কিন্তু একধরনের গ্রুপিং-লবিং তৈরি হয়। কেননা অনেকেই নির্বাচন করতে চান। প্রত্যেকেই তার অনুসারীদের নিয়ে চলাফেরা করেন। তখন মানুষ সেটিকে কোন্দল ভেবে নেয়। লক্ষ করার বিষয়, নমিনেশন ঘোষণা হয়ে গেলেই কিন্তু সবাইকে আবার এক কাতারে দেখা যায়। কাজেই আমি বলব, কোন্দল কিছুই নয়; আমরা সবাই এক এবং আওয়ামী লীগ তথা নৌকার রাজনীতি করি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : দল বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : গত দশ বছরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ কন্যা দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়েছে, সে ধারা বজায় আছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে দ্রুত এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। দেশের সাধারণ মানুষের আশা-ভরসার মূর্ত প্রতীক সফল প্রধানমন্ত্রী ‘মাদার অব হিউম্যানিটিজ’ জননেত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রচেষ্টায় দেশের আইটি সেক্টরে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করার দুঃসাহস দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হয়েছে। কাজেই দেশের মানুষ এসব অবশ্যই ভেবে দেখবে এবং আওয়ামী লীগকে আবারো সরকার গঠনের জন্য বিজয়ী করবেÑ এ কথা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলতে পারি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে কোন কাজগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : দেখুন, অনেক কাজই আছে যেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা দরকার। তবে সেসব নিয়ে আজ আর বিস্তারিত কিছু আলাপ করতে চাচ্ছি না। কেননা কাজ করতে গেলে আগে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে হবে। তারপরও বলব, আমার কিছু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে; সেগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবো যদি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে পারি। আর আমার লক্ষ্যই থাকবে, নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাটকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার। আর এর জন্য যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার, সেগুলো গ্রহণ করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : আপনার নির্বাচনী এলাকার প্রধান সমস্যা কোনটি এবং এর সমাধানে আপনার পরিকল্পনা...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : আপনারা জানেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনটি তিনটি উপজেলা অর্থাৎ নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলার বড় অংশই বরেন্দ্র অঞ্চলের মধ্যে পড়েছে। আর বরেন্দ্র অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে বরাবরই পানি সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নামতেই আছে। যদি দলীয় মনোনয়ন পাই এবং নির্বাচিত হতে পারি তবে পানি সংকট নিরসনে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করার চেষ্টা করব। যাতে ভবিষ্যতে বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষকে পানি নিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : সীমান্তঘেঁষা জেলা হিসেবে মাদক একটি বড় সমস্যা, এটি প্রতিরোধে আপনার ভূমিকা...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগ সরকার কিন্তু জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে বিভিন্ন সময় ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে এবং চলছে। তারপরও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হয়েছে তা বলা যাবে না। তবে এটি রোধে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আর সীমান্ত এলাকা হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এর বিস্তারটা একটু বেশিই। আবারও বলব, আমি যদি দলীয় মনোনয়ন পাই এবং নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে প্রথম কাজই হবে নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার। তরুণ-যুবরাই কিন্তু দেশের ভবিষ্যৎ কা-ারী। তাদেরকে যদি মাদকের মতো ভয়াবহ নেশার ছোবল থেকে মুক্ত করা না যায়, তাহলে সমাজটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। কাজেই মাদক প্রতিরোধে সর্বোচ্চ যা করণীয়, তাই করার চেষ্টা করবো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে আছে কিনা...
সৈকত জোয়ার্দ্দার : এরকম কোনো ইচ্ছে মনের মধ্যে পোষণ করি না। কাজেই এ সম্পর্কে বিশদ বলার কিছু নেই। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে দলীয় কর্মী হিসেবে যা যা করণীয় তা সবসময়ই করার চেষ্টা করব। আর এর জন্য দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার আদৌ কোনো মনোভাব কিংবা ইচ্ছা কোনোটাই আমার নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি : চাঁপাইনবাবগঞ্জটিভি পরিবারকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
সৈকত জোয়ার্দ্দার : আপনাদেরও ধন্যবাদ। আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে কিছু বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।


কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7