বাঁশের সাঁকো দিয়েই নিত্যদিনের পারাপার

শফিকুল ইসলাম, শিবগঞ্জ অফিস: শিবগঞ্জের মোবারকপুরের শংকরমাদিয়া গ্রামে চালের ডাড়ার উপর শতাধিক বছর থেকে একটি মাত্র বাঁশের সাঁকোই প্রায় ৪০ হাজার লোকের পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা।
 সরজমিনে গিয়েদেখা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাধীন মোবারকপুর ইউনিয়নের শংকর মাদিয়া গ্রামের মধ্যে চালের ডালার উপর বাঁশের সাঁকেটির উপর দিয়ে মানুষ অতি কষ্টে পারাপার হচ্ছে। সাঁকোটির দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩শ ফিট ও প্রস্তু প্রায় সাড়ে ৩ ফিট।এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছেএ সাঁকোটির উপর দিয়েই  উপজেলার মোবারকপুর, কানসাট ও চককীর্তি ইউনিয়নের শংকর মাদিয়া, চাতরা,শিবনগর, ত্রিমোহনী,গুয়াবাড়ি চাঁদপুর, রানীবাড়ি, সাহেবগ্রাম,কৃষ্ণচন্দ্রপুর, গুহাম বাড়ি,বরগুনাসহ প্রায় ১২/১৩টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে অতি কষ্টে পারাপার হয়। 


শংকরমাদিয়া গ্রামের মৃত মোকসেদের ছেলে আব্দর রশিদ জানান দেশ স্বাধীনের পর অর্থাৎ ১৯৭২-৭৩সালের দিকে ডাড়াটিতে কয়েকটি বাঁশের খুঁটি পুঁতে পানির উপরে ওখুঁটির মাঝামাঝিতে ২/৩টি বাঁশ পাশাপাশি বেঁধে ও তার খানিকটা উপরে বাঁশ বেঁধে রাখা হতো। উপরের বাঁশটি ধরে ও নীচের ২/৩বাঁশের উপর দিয়ে অতি কষ্টে হেঁটে মানুষ পার হতো।এলাকার বাবুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম আব্দুর রাকিব, সাইদুর রহমান সহ প্রায় ২০/২৫জন মানুষ জানান, স্বাধীনের কযেকবছর পর থেকে এলাকার কয়েকটি  গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে প্রতিবছরই দেড় লাখ টাকার বাঁশ কিনে নিজ শ্রমে প্রায় সাড়ে ৩শ ফিট লম্বা ও সাড়ে তিন ফিট প্রশস্ত বাঁশের সাঁকোটি তৈরী করা হয়।তারা আরো জানান বন্যার সময় এ সাঁকোটির উপর দিয়ে পারাপার হওয়া খুব কষ্টকর ও ভয়ঙ্কর হয়।বিশেষ করে শিশুদের দেখেশুনে রাখতে হয়।বিদ্যালয়গামী শিশুদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে রেখে আসে। শংকর মাদিয়া গ্রামের মৃত শুকন আলির ছেলে রমজান আলি(৯৫) দু:খ করে বলেন, অনেক নেতাই প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন।কিন্তু কেউ  ব্রীজটি নির্মানের উদ্যোগ নেয়নি। যদি শেষ বয়সে ব্রীজটি দেখে যেতে পেতাম তবে নিজেকে ধন্য মনে করতাম এবং উদ্যোগী ব্যক্তির জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করতাম।তিনি আরো বলেন সাঁকোটির দক্ষিন দিকের এলাকায় অনেক আপণ জন থাকলেও এ সাঁকোর উপর যেতে না পারায় তাদের সাথে দেখা করতে পারি না। সাহেব গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও আলোর দিশারী বয়স্ক শিক্ষা নিকেতনের পরিচালক আকুর রবও শংকর মাদিয়া গ্রামের জবেদ আলির ছেলে ও আলো বহুমুখী বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লি: পরিচালক সুমন আলি জানান সাধারণ মানুষের কল্যানে ত্রিমোহনী ও শংকর মাদিয়া গ্রামের মাঝে বাঁশের সাঁকোটির স্থলে একটি ব্রীজ নির্মান অপরিহার্য। আমরা কয়েকবার  রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। কিছুটা আশ্বাস দিলেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপকহারে বহুমুখী উন্নয়নের পাশাপাশি এখানে একটি ব্রীজ নির্মানের মাধ্যমে এলাকায় সরকারের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জল করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃ পক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। মোবারকপুর ইউপি চেয়ারম্যান তোহিদুর রহমান মিঞা বলেন, সমস্যাটির কথা  একজন চেয়ারম্যান হিসাবে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়নি। তবে সামনে উপজেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় বিষয়টি তুলে ধরবো। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আরিফুল ইসলাম,সাঁকো সম্পর্কে আমার জানা নেই।তবে এখন জানলাম,সরাসরি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হারুর অর রশিদ বলেন আমি নতুন যোগদান  করেছি। সব তথ্য আমার জানা নাই। তবে আমি বিষয়টি সঠিক তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে ঐ এলাকার জনদূর্ভোগ দূও করা চেষ্টা করবো।শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধূরী রওশন ইসলাম বলেন বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এমনকি কেউ কোন আবেদনও করেননি। এখন শুনলাম ঐখানে পাশাপাশি দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে।চেষ্টা করবো সামনে উপজেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় বিষয়টি তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের।উল্লেখ্য যে চককীর্তি ইাউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর ও শিবনগর গ্রামের মধ্যখানে একই ডাড়ার উপর একই ধরনের বাঁশের সাঁকো রয়েছে। যার একদিকে দূর্গম এলাকা ও অন্যদিকে একটি প্রাচীন জামে মসজিদ রয়েছে।এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য ডা:সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন বর্তমান সরকারের আমলে শিবগঞ্জ উপজেলায় কোন নদী বা ডাড়ার উপর কোন বাঁশের সাঁকো থাকবে না।পর্যায়ক্রমে সবগুলোতে ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মানের মাধ্যমে যাতায়াত ব্যবস্থাকে অধিকতর উন্নত  করা হবে।





কনটেন্ট চুরি আপনার মেধাকে অলস করে তুলে, আমরা এ নিন্দনীয় কাজকে নিরুৎসাহিত করি। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

About chapainawabganj tv

বিজ্ঞাপন

src="https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-5331163805288347" crossorigin="anonymous">

7